আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, গত ২৭ অক্টোবর গাজায় স্থল অভিযান শুরু করার পর এখন পর্যন্ত তাদের ১২১ জন সেনা নিহত হয়েছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ’ সেনা হারিয়েছে দেশটি। আহত হয়েছে অন্তত ৫ হাজার।
এদিকে গাজার একটি হাসপাতাল থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি হামাসের ৮০ সদস্যকে আটকের দাবি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। গত শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা গাজা উপত্যকার কামাল আদওয়ান হাসপাতাল থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। একই হাসপাতাল থেকে ৮০ হামাস সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তবে হামাস তাদের এই দাবির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তারা বলেছে, ওই হাসপাতালে ইসরাইলি সেনারা ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।
গত বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলি বাহিনী বেশ কয়েকদিন ধরে গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তারা রোগীদের কক্ষে গুলি চালাচ্ছে এবং বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করেছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, হাসপাতালের বাইরে অজ্ঞাত স্থান থেকে হাসপাতালের পরিচালক ও ৭০ জন কর্মীকে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার খবর পাওয়া গেছে।
এরপর শনিবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলে, তারা কামাল আদওয়ান হাসপাতালের এলাকায় তাদের অভিযান সম্পন্ন করেছে। তাদের দাবি, হামাস ওই হাসপাতালটিকে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত। এদিকে গাজায় রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ৭২তম দিনের মতো বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজায় হামলা বন্ধ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহু সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি চাপের মুখে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে ফের আলোচনায় ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া কাতারি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) নরওয়ের রাজধানী অসলোয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস।
তবে হামাস বলেছে, ইসরাইল গাজায় হামলা বন্ধ না করলে জিম্মি মুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনায় তারা যাবে না। ইসরাইলের পক্ষ থেকে আলোচনা শুরুর ইঙ্গিতের পরই এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে গোষ্ঠীটি।বলেছে, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে জায়নবাদী ইসরাইলের আগ্রাসন স্থায়ীভাবে বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বন্দি বিনিময়ের জন্য কোনো আলোচনায় না যাওয়ার জন্য নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে।’চলতি বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলার মধ্য দিয়ে দেশটির এক হাজার ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে এখনও প্রায় ১২৯ জন হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ৯:৪০