জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেট্রোরেল চালুর ফলে একদিকে শিক্ষার্থীদের সঠিক সময়ে নিরাপদ যাত্রার আনন্দ এবং অপরদিকে শব্দ দূষণের আশঙ্কার কারণে দোলাচলে পড়েছেন শিক্ষার্থীদরা। শব্দ দূষণ হলে লাইব্রেরির পাশে সাউন্ড প্রুফ গ্লাস ব্যবহারের কথা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।জানা যায়, ২০১৫ সালে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হলে মেট্রোরেলের কারণে ক্যাম্পাসে শব্দ দূষণের ফলে পড়াশোনা ব্যাহত হবে বলে অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেসব প্রতিবাদকারীরা এখন ক্ষমতাসীন দলের পদবী প্রাপ্ত হওয়ায় উচ্ছসিত। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো শব্দ দূষণের আশঙ্কা বিরাজ করছে।বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল মতিঝিল থেকে আজ ১৩ ডিসেম্বর(২০২৩) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে টিএসসি স্টেশনে পৌঁছালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসাহী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রথম যাত্রার মাধ্যমে স্বাগত জানিয়েছে।ঢাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এ মেট্রোরেলকে অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
শাহরিয়ার ইকবাল নামে এক শিক্ষার্থী মেট্রোরেলের জন্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলে উঠে দারুণ লাগছে। এখন থেকে আমি আমার সকাল ৮টার ক্লাস মিস করব না এবং রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যামের ঝামেলা এড়াতে পারব। টিএসসি মেট্রোরেল স্টেশন দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আশীর্বাদ।উত্তরা থেকে আসা অনাবাসিক শিক্ষার্থী সিফাত রহমান শিক্ষার্থীদের জন্য সাশ্রয়ী ভাড়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “বর্তমান মেট্রোরেল ভাড়া অনেক শিক্ষার্থীর জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য কম ভাড়া বাস্তবায়নে কাজ করবে”।আনন্দ -উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীদের রয়েছে শব্দ দূষণের আশঙ্কা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান ,”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী, সায়েন্স লাইব্রেরী , মোকাররম ভবন এবং কার্জন হল মেট্রোরেলের রাস্তার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় শব্দ দূষণের ফলে গবেষণার কাজ ব্যাহত হতে পারে”।সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর এ এস এম মাকসুদ কামাল জানান, “আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে, তারা অনেক সময় বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে যখন ক্যাম্পাসে আসে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহার করুক আর না করুক, তারা অনেক সময় সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারে না। ফলে তারা ক্লাস মিস সহ নানাবিধ জটিলতার মুখোমুখি হয়। মেট্রোরেল চালু হওয়ার ফলে তারা ‘কাউন্টডাউন’ পরিকল্পনা নিয়ে সঠিক সময়ে ক্যাম্পাসে আসতে পারবে। মেট্রোরেলে নিরাপত্তা নিশ্চিত। শিক্ষক , শিক্ষার্থী সহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যারা সদস্য ,তারা স্বাচ্ছন্দে মেট্রোরেলের অ্যালাইনমেন্ট ব্যবহার করে যোগাযোগ সুবিধা নিতে পারবে”।শব্দ দূষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে যে শব্দ দূষণ হয় , সেটা আমরা প্রথমে দাবি তুলেছিলাম।এই বিষয়ে আমাদের একটা মিটিং হয়েছিল। আমি তখন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। সাউন্ড ওয়েব (শব্দ তরঙ্গ) দূর করার জন্য লাইব্রেরীর পাশে সাউন্ড প্রুফ গ্লাস দেওয়ার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছিলাম। তারা আমাদের কে এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছিলেন” ।
কিউএনবি/অনিমা/১৪ ডিসেম্বর ২০২৩,/দুপুর ১২:২২