সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

সুন্দরবনের কোলে জরাজীর্ণ এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসা নতুন ভবনের দাবী শিক্ষার্থীদের

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১০৪ Time View

এস এম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পি.সি বারইখালী গ্রাম ৩ কি.মি দুরত্বে সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশন।  মাঝখানে  ভোলা নদীর খাল। এক সময়ে নদীর খর¯্রােতে প্রবাহমান এ ভোলা নদী তার জৌলুস হারিয়ে ফেলে ভরাট হয়ে পলি পড়ে শুকিয়ে আয়তনে ছোট আকারে রুপান্তরিত হয়েছে। সুন্দরবনের কোল ঘেষা এ জনপদের জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হলেও হয়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন। এ গ্রামেই স্থাপিত এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসা। জরাজীর্ণ টিন শেড ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। স্থানীয় অভিভাবক ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের দাবী একটি নতুন ভবনের।

সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার দুটি উপজেলার সীমান্তবর্তী সুন্দরবন ঘেষা নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নে এনয়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৮১সালে স্থাপিত হলেও পরবর্তীতে হয়নি কোন অবকাঠামো উন্নয়ন। স্যানিটেশন, সুপেয় পানির সমস্যা ও  চলাচলের দেড় কিলোমিটার একমাত্র  রাস্তাটিরও বেহাল দশা। এ মাদ্রাসায় মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৮৭ জন। শিক্ষকমন্ডলী ১৪ জন, কর্মচারী ৫ জন। সহ-সুপারসহ শিক্ষকমন্ডলীর গুরুত্বপূর্ন ৫টি পদ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারিভাবে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পায়নি কোন ফ্যাসালিটিজ ভবন।

একটি টিনসেডের কাঠের ঘরের শ্রেনীকক্ষে দুই শিফটে ইবতেদায়ী শাখা ও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হয় পাঠদান। পাশেই রয়েছে শিক্ষকমন্ডলীর সেমিপাকা টিনসেডের একটি অফিসকক্ষ। এ প্রতিষ্ঠানের শিশুশিক্ষার্থীদের হেফজখানাটিও বেহাল অবস্থা। ২০০৭ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড় সিডরে মাদ্রাসার টিনসেডের শ্রেণীকক্ষের ঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় কোনমতে বাশ, টিন, কাঠের খুটি দিয়ে ঘর তৈরী করে সেখানেই চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সে ঘরটির অবস্থাও খুবই নাজুক।

কথা হয় মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন, লামিয়া, মো.ওমর ফারুক, ৭ম শ্রেণীর আরেফিন ও ৯ম শ্রেণীর আব্দুল্লাহ্ সহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রচন্ড গরমে কষ্ট করে আমাদের ক্লাশ করতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে ছিদ্র হওয়া টিন থেকে পানি পড়ে বই খাতা ভিজে যায়। খাবার পানির জন্য আধা কিলোমিটার দুরে গিয়ে খোলা পুকুর থেকে পানি এনে খেতে হয়। পুকুরের ফিল্টারটি অকেজো নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মেরামত করছেনা কেউ। আমাদের  বাথরুমের যাওয়ারও কোন সু-ব্যবস্থা নেই। কবে নাগাদ দুর হবে আমাদের মাদ্রাসার দুরঅবস্থার, বলতে পারেন? গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এরকম নানাবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে একটি নতুন ভবনের।

এ বিষয়ে এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস সালাম খান বলেন, দীর্ঘদিন মাদ্রাসার শিক্ষকদের চলমান বেতনভাতা বন্ধ থাকার পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় বেতন ভাতা চালু হয়। বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে অনেক ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়ার গুনগত মান পরিবর্তন হলেও অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারেনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে নতুন ভবনের জন্য।  মাদ্রসায় একটি নতুন পাকা ভবন হলে শিক্ষার পরিবেশসহ বর্তমান সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ সম্পর্কে এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, সুন্দরবন ঘেষা প্রত্যন্ত অঞ্চলের সিমান্তবর্তী শরণখোলার ধানসাগর গ্রামসহ আশপাসের কয়েক গ্রামের ছেলে মেয়েরা এখানে লেখাপড়া করে। শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক বেশী। তবে, যোগাযোগের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা। ৩ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা  শিক্ষার্থীদের ওয়াস বেøাক স্যানিটেশন ব্যবহারে পাকা ল্যাটট্রিন  ও  খাবার পানির জন্য ট্যাংকির ব্যবস্থা করা হলে ছেলে মেয়েদের আর কষ্ট থাকবে না। তিনি এ মাদ্রাসায় একটি নতুন ভবনের দাবি জানান।  

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাফিজ আক্তার বলেন, স্কুল, মাদ্রাসা ভবনের চাহিদা স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্যর মাধ্যমে পাঠানো হয়। যে ভবনগুলো পাস হয়ে আসে আমরা শুধুমাত্র  নির্মাণাধীন সেই ভবনগুলো দেখভাল করি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৫ নভেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:১৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit