এস এম সাইফুল ইসলাম কবির. বাগেরহাট: উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় “হামুন” আতংকে। নতুন করে ভাঙনের মুখে পেেড়েছ ফেরীঘাট সংলগ্ন ১কিমি পাকা রাস্তা সহ প্রত্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন কাঁচা-পাকা রাস্তা ঘাট। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সকল প্রকার প্রস্তুতি নিয়ে উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিও উপজেলা প্রশাসন এক জরুরী সভা করেছেন। ৮৫টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে ৭টি কন্ট্রোল রুম। স্থানীয় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সচেতনতার লক্ষ্যে সভা করে সকল প্রকার ছুটি বাতিল করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সরেজমিনে মঙ্গলবার উপকূলীয় এ উপজেলার পানগুছি নদীর তীরবর্তী ১৬টি ইউনিয়ন সহ পৌরসভার ভাঙন কবলিত ২০টি গ্রামের ১০হাজার মানুষ একদিকে নদীর অব্যাহত ভাঙন আতংঙ্ক অন্যদিকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ, জলোচ্ছাসের সাথে লড়াই সংগ্রাম করে বেচে থাকতে হচ্ছে। সর্বনাশা নদী কেড়ে নিয়েছে শত শত বিঘা ফসলী জমি, ঘরবাড়ী, গাছপালা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সবকিছু হারিয়ে সহায় সম্বলহীন হয়ে প্রতিবছরই শত শত পরিবার হচ্ছেন অভিবাসন। ২০০৭ সালে প্রলংয়কারী ঘূর্নীঝড় সিডরে উপজেলার ৯৩ জন লোকের প্রাণ নিয়েছিলো কেড়ে। এরকম আইলা, আম্পান, বুলবুল, ফনী, চিত্রাং সহ প্রতিবছরই দূর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় এ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের। আজো আতংকে আতকে উঠে স্বজনহারা পরিবারেরা।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুন ভোররাত থেকেই বৃষ্টি হয়ে সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থমথমে, পানগুছিতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উত্তাল হয়েছে নদী। গত দুদিন ধরে নতুন করে পানির চাপে বারইখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে ফেরীঘাট সংলগ্ন ১কি.মি পাকা রাস্তা বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া নদী তীরবর্তী কাঠাঁলতলা, গাবতলা, খাউলিয়া, ফাসিয়াতলা, হোগলাবুনিয়ার বদনীভাঙ্গা,সানকীভাঙ্গা,পাঠামা
কথা হয় নদী তীরবর্তী ভাঙন কবলিত ফেরীঘাট সংলগ্ন বাসিন্দা শেফালী বেগম, রুলিয়া বেগম, ভোলা সুকানী মোস্তাফিজুর রহমান,আজিম মুন্সী, কাউন্সিলর শাহিন শেখ সহ ভুক্তভোগী অনেকেই বলেন প্রতিবছরই নতুন নতুন স্থান থেকে ভেঙ্গে যাচ্ছে। গত দুদিন পূর্বে আবারো ফেরীঘাট এলাকার ১কি.মি পাকা রাস্তাটি অনেক জায়গা থেকে নতুন করে ভেঙ্গে পড়েছে নদীগর্ভে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ,হামুন’ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সকল প্রকার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। শুকনা খাবার, সু-পেয় পানি, ৮৫টি সাইক্লোন শেল্টার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে, বয়স্ক, প্রতিবন্ধি, গর্ভবতী মায়েদের ঘূর্ণিঝড়ের শুরুর পূর্বমূহুর্তেই নিরাপদ স্থানে নেয়ার জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ’হামুন’ মোকাবেলায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও উপজেলা প্রশাসন জরুরী সভা করে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মৎস ও কৃষি সেক্টরে ক্ষতির সম্মুখীন কম হয় সেজন্য পঞ্চকরণ, বহরবুনিয়া ও জিউধরায় কৃষকদের সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলাদা সভা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মেডিকেল টিম, ভলান্টিয়ার, ফায়ার সার্ভিস,স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, স্কাউট, আনসার ভিডিপি,পুলিশের সমন্বয়ে পৃথক পৃথক টিম গঠন করে মাঠ পর্যায়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/২৪ অক্টোবর ২০২৩,/বিকাল ৫:৫৪