খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ভোজন রশিকদের পিঠা একটি লোভনিয় খাবার। সারা বছরই তাদের জন্য কোন না কোন পিঠার মৌসুম থাকে। তবে শীতের শুরু থেকেই হরেক রকমের পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। অতিথি আপ্যায়নে পিঠার বিকল্প কিছুই চিন্তা করা যায় না।
পিঠা তৈরীতে যাদের অলসতা বা পিঠা তৈরীর সুযোগ নেই তারাও পিঠার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হবেন না। তাদের কথা চিন্তায় রেখে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরী করা হয় পিঠা। পিঠা বিক্রি হয় শরীয়তপুরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে, রেস্টুরেন্টে বা ফেরিওয়ালাদের মাধ্যমে পাড়া-মহল্লায়।
শীত মৌসুমে শরীয়তপুরে সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায় নারিকেল ও গুড়ের সমন্বয়ে ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা, গুর-দুধের সমন্বয়ে পাটিসাপটা পিঠা, বিভিন্ন ধরণের নকশা করা নকশি পিঠা, ঝাল বা মিষ্টির সমন্বয়ে ভিন্ন স্বাদের চিতই পিঠা। বাণিজ্যিক ভাবে তৈরী জনপ্রিয় জামাই পিঠার চাহিদা সবচেয়ে বেশী শরীয়তপুরে। এই পিঠা সারা বছরই পাওয়া যায়।
তাছাড়া মালপোয়া, গোকুল, ঝিনুক, দুধ পিঠা, তেলের পিঠা, মেরা পিঠা, ছাঁচ পিঠা, চই পিঠার কদরও রয়েছে শীতের মৌসুমে। রাস্তার পাশে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বেশী পাওয়া যায় চিতই ও ভাপা পিঠা। তৈরী জামাই পিঠা ফেরি করে বিক্রি করা হয় বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়।
তবে হুহু করে বেড়েই চলছে পিঠার দাম, গত বছর যে চিতই পিঠা ৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবছর তা ১০ টাকা। ভাপা পিঠা ১০ টাকার স্থলে ২০ টাকা (যদিও পিঠা তৈরীর কোন উপকরণের দাম বাড়েনি)। একটি পাটি শাপটা পিঠা ২০ টাকা। তবুও ভীড় জমিয়ে পিঠা খায় লোকেরা।
পিঠা খেতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা মহিউদ্দিন নামে এক গ্রাহকের সাথে কথা হয়। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায়। পিঠার প্রতি তার দুর্বলতা রয়েছে। ছুটিতে বাড়ি গেলে পিঠা খাওয়া হয়। এছাড়া তিনি রাস্তার পাশের পিঠার দোকান থেকে পিঠা খেয়ে থাকেন।
জামাই পিঠার কারিগর ও মালিক রফিকুল ইসলাম (উল্লাপাড়া-সিরাজগঞ্জ) বলেন, ২০১১ সন থেকে শরীয়তপুরে পিঠা তৈরী করে বিক্রি করে আসছেন। তার ৬ জন হকারস রয়েছেন। প্রতিদিন তিনি ২ থেকে ৩ হাজার পিচ পিঠা তৈরী করেন। তিনি আরো জানায়, শীতের সময় পিঠার চাহিদা বেশী থাকে।
শরীয়তপুরের চৌরঙ্গী এলাকার পিঠার দোকানে বেশ ভীড় থাকে। সেখান দাঁড়িয়ে অনেকে পিঠা খায় আবার পার্সেল করে পরিবারের সদস্য বা মেহমানের জন্য নিয়ে যায়। কখনও আত্মিয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় পিঠা নিয়ে যায়। সেই পিঠা তৈরীর কারিগর জানায়, ৮ বছর ধরে তিনি চৌরঙ্গীতে শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পিঠা তৈরী ও বিক্রি করেন। তার তৈরী পিঠার ব্যপক চাহিদা রয়েছে।
তবে শীতের সময় শরীয়তপুরের ঘরে ঘরে পিঠা তৈরী হয়। বর্তমানে খেঁজুরের গুড়ের উৎপাদন কমে যাওয়ায় পিঠাও কম তৈরী হয়। তবে শরীয়তপুরে খেঁজুরের রসের নাস্তার স্বাদ যে একবার নিয়েছে সেই স্বাদ আর ভোলা যায় না।
কিউএনবি/আয়শা/২২ ডিসেম্বর ২০২৫,/বিকাল ৫:৪৪