স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানের দৈন্যদশা আরও স্পষ্ট পাওয়ারপ্লেতে। যে সময়টা স্ট্রোকপ্লেতে চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছড়ানোর, অথচ চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তানি ব্যাটাররা প্রথম পাওয়ারপ্লেতে কোনো ছক্কাই মারতে পারেনি। শুধু বিশ্বকাপই নয়, চলতি বছর ওয়ানডে ক্রিকেটেই প্রথম পাওয়ারপ্লেতে কোনো ছক্কা নেই পাকিস্তানি ব্যাটারদের। আর গোটা চলতি বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে পাকিস্তানিরা মেরেছেই ১৫টি ছক্কা, যা টুর্নামেন্টের সকল দল মিলিয়ে সর্বনিম্ন।
পাকিস্তানকে নিয়ে আরও অস্বস্তিকর তথ্য দিয়েছে ক্রিকেটের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা ওয়েবসাইট ক্রিকভিজ। চার-ছয় তো দূরে থাক, চলতি বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম আক্রমণাত্মক শট খেলা দলটার নাম পাকিস্তান। আর এমন পরিসংখ্যান নিয়েও আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে তারা। এই ম্যাচে হেরে গেলে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাবে পাকিস্তানের।
এবারের বিশ্বকাপে আক্রমণাত্মক শট খেলায় দশ দলের মধ্যে সবার শেষে পাকিস্তান। মোট খেলা বলের মাত্র ৪৩ শতাংশ বলে আক্রমণাত্মক শট খেলেছেন বাবর আজমরা। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ১১১৫ বল খেলেছে পাকিস্তান, যার মধ্যে আক্রমণাত্মক শট খেলেছে ৪৭৯টি বলে।
আক্রমণাত্মক শট খেলায় শুধু পাকিস্তানের চেয়েই এগিয়ে বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের ঠিক আগের নামটা বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন আক্রমণাত্মক শট খেলেছেন সাকিব-মুশফিকরা। নিজেদের খেলা ১১০৩ বলের মধ্যে ৫৪০টিতে আক্রমণাত্মক শট খেলেছে বাংলাদেশি ব্যাটাররা। যা শতকরার হিসেবে ৪৯ শতাংশ। এই তালিকায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশই শুধু পঞ্চাশ শতাংশের নিচে আছে।
মজার বিষয়, টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল ভারতও এই তালিকায় খুব ভালো অবস্থানে নেই। আট নম্বরে আছে তারা। ৫৪ শতাংশ বলে আক্রমণাত্মক শট খেলেছে ভারতীয় ব্যাটাররা। তবে আক্রমণ ও রক্ষণে ভারসাম্য বজায় রেখে ভারত দেখিয়ে দিয়েছে- সবসময় আক্রমণাত্মক শট না খেলেও ভালো করা যায়।
ভারতের ঠিক উল্টো অবস্থা ইংল্যান্ডের। আক্রমণাত্মক শট খেলার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বাটলারের দল। ৬২ শতাংশ বলেই আক্রমণাত্মক শট খেলেছেন ইংলিশরা। অথচ মাত্র একটি ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকার নয় নম্বরে অবস্থান করছে তারা।
৬৬ শতাংশ আক্রমণাত্মক শট খেলে তালিকার শীর্ষে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টেম্বা বাভুমার দল ১১৬০ বল মোকাবেলা করে ৭৬৬টি বলেই খেলেছে আক্রমণাত্মক শট। দলটির খেলোয়াড়দের সম্মিলিত স্ট্রাইকরেটও সবচেয়ে বেশি ১১০.৮৬। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস দুটিও প্রোটিয়ারাই খেলেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের করা ৪২৮ রান তো বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ। আর সবশেষ ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে থেমেছে ৩৯৯ রানে।
আক্রমণাত্মক শট খেলায় শীর্ষ পাঁচের বাকি তিনটি দল যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড (৫৮ শতাংশ), অস্ট্রেলিয়া (৫৭ শতাংশ) ও নেদারল্যান্ডস (৫৭ শতাংশ)। ছয় ও সাতে আফগানিস্তান (৫৬ শতাংশ) ও শ্রীলঙ্কা (৫৪ শতাংশ)। ভারতের সমান ৫৪ শতাংশ আক্রমণাত্মক শট খেলেও এগিয়ে থাকার কারণ লঙ্কানরা ভারতীয়দের চেয়ে কম বলে বেশি সংখ্যক আক্রমণাত্মক শট খেলেছেন। একই কারণে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া।