লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কষা হওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন প্রায় সবাই। কারও কম আবার কারও হয়তো খুব বেশি। কিন্তু জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে এই সমস্যা সবাইকে ভুগতে হয়।
সাধারণত অস্বাস্থ্যকর এবং বাজে খাদ্যাভ্যাস, অপুষ্টিকর খাবার ইত্যাদির কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো অস্বস্তিকর সমস্যায় পড়ে থাকেন অনেকেই। তবে জীবনযাপনের ধরন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা সহজেই দূর করা যায়।
যদি সপ্তাহে ২-৩ বার বা তার কম বার মলত্যাগ হয় অথবা মল যদি অতিরিক্ত কঠিন বা শুষ্ক হয় এবং পরিমাণমতো মলত্যাগ যদি না হয় তাহলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকে। কিন্তু যদি এই সমস্যা প্রায় ৩ মাস পর্যন্ত দীর্ঘ হয় তাহলে সেটাকে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।
তবে এটি জীবননাশক কোন সমস্যা নয় এবং খাদ্যাভ্যাসে ও জীবনধারায় পরিবর্তন এনে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
নানারকম ফলের রসে বা ফল বা সবজি দিয়ে তৈরি পানীয় ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার দ্বারা ভরপুর থাকে। এসব পানীয় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি শরীরে প্রয়োজনীয় ফাইবার সরবরাহ করতে পারে।
দ্রবণীয় ফাইবার মলের মধ্যে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং এটিকে নরম করে তোলে। এটি ভাল মলত্যাগে সাহায্য করে। আর অদ্রবণীয় ফাইবার মলত্যাগকে দ্রুত করে।
এখানে কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর জন্য সাত ধরনের পানীয়র নাম দেয়া হল,
আপেল উচ্চ মানের ফাইবার, খনিজ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকরী একটি ফল। আর মৌরি বীজের গুঁড়া ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ। এটি মলের মধ্যে পানি ধরে রেখে মসৃণ মলত্যাগে সুবিধা করে দেয়।
একটা আপেল কয়েক টুকরা করে কেটে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে নিয়ে আপেলের টুকরোগুলো ব্লেড করে রসগুলো একটি গ্লাসে ঢেলে নিন। তারপর এতে মৌরি গুঁড়া যোগ করুন এবং ভালভাবে নেড়ে খেয়ে নিন।
আঙ্গুরে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এবং ফাইবার থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেট করতে এবং মলকে বাল্ক আপ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আঙ্গুরে সরবিটল থাকে, যা বেশি পরিমাণে পানি ধারণ করে এবং সহজে মল নির্গত করে।
একটি জুসারে বা ব্লেডারে কয়েকটি তাজা আঙ্গুর, কয়েক টুকরা আদা, পরিমাণমতো পানি ও অল্প লবণ যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন। জুসটি না ছেঁকেই পান করুন।
কমলা ভিটামিন সি, খনিজ এবং খাদ্য তালিকাগত ফাইবারের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এই ফাইবার পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং মলের সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি যোগ করে, যার ফলে অন্ত্রের গতিবিধি দ্রুত হয়।
একটি কমলা থেকে রস বের করে নিয়ে তাতে একটু লবণ যোগ করে পান করুন।
নাশপাতিও ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে বরই এর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ সরবিটল থাকে যা অন্ত্রের চলাচল সহজ করতে সাহায্য করে।
একটি ব্লেন্ডারে কয়েক টুকরা নাশপাতি, পরিমাণমতো পানি নিয়ে ব্লেড করুন। এরপর নাশপাতির জুসে একটু লেবুর রস ও অল্প পরিমাণে লবণ যোগ করে পান করুন।
বরইতে রয়েছে ফাইবার এবং সরবিটল, যা মলত্যাগ দ্রুত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জিরা অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
কয়েকটি বরই এক কাপ গরম পানিতে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। বরই নরম হওয়ার সাথে সাথে খোসা ফেলে দিয়ে পরিমাণমতো পানি নিয়ে ব্লেন্ডারে নিন। সাথে মধু ও জিরা যোগ করেন। ব্লেন্ড করা জুস একটি পাত্রে নিয়ে পান করুন।
চেরিতে পলিফেনল, মিনারেল এবং ফাইবার থাকে যা মলের সাথে প্রচুর পরিমাণে বাল্ক যোগ করতে সাহায্য করে এবং মলত্যাগকে মসৃণ করে তোলে।
কয়েকটি চেরি ভালভাবে ধুয়ে বীজ সরিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর পরিমাণমতো লবণ ছিটিয়ে দিয়ে পান করুন।
লেবু ফাইবার এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। লেবু কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। আর জিরার গুঁড়া পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে অনেক উপকারী।
এক কাপ গরম পানিতে লেবুর রস, মধু এবং জিরার গুঁড়া যোগ করুন ভালোমতো মিশিয়ে পান করুন।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ
কিউএনবি/অনিমা/২৯ অগাস্ট ২০২৩,/দুপুর ২:২০