এনিরুল ইসলাম মনি ; শার্শা(যশোর)সংবাদদাতা : যশোরের শার্শা উপজেলার যশোর – বেনাপোল সড়কের নাভারন বাজারে পাকা রাস্তারা উপর আড়াইশ/তিনশ বছরের পূরানো মৃত শিশু গাছ যে কোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশংকা রয়েছ্।ে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনার । যে দূর্ঘটনায় ঝরে যেতে পারে পথচারী মানুষের জীবন।
শার্শা উপজেলার জনবহুল নাভারন বাজারে প্রায় ১৫/২০টি মৃত শিশু গাছ গুলি দীর্ঘ দিন আগে মারা গেলেও দেখার কেউ নেই। যশোর – বেনাপোল সড়কের নাভারন বাজারে পাকা রাস্তারা উপর লাগানো গত আড়াইশ/তিনশ বছরের এই পূরানো মৃত শিশু গাছ গুলোর নিচ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার সাধারন পথচারী চলাচল করলেও চোখে পড়েনা প্রশাসনের। আসলে রাস্তার উপর মৃত এই গাছগুলি সাধারনের মৃত ঝুকি থাকলেও কেউ দেখে না। সাধারন মানুষের প্রশ্ন এ গুলি দেখার দায়িত্ব আসলে কার? স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের, প্রশাসনের, সড়ক ও জন পথ বিভাগের , নাকি মন্ত্রনালয়ের। যে কোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে এই গাছগুলি। দ্রুত এই মরা গাছ গুলি না কাটলে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনার দায় ভার কে নেবে এটাই প্রশ্ন।
কথিত সূত্রে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় আড়াইশ/তিনশ বছর আগে ঝিনাইদাহ কালিগঞ্জের কালী বাবু নামক এক ব্যবসায়ী ঝিনাইদাহ কালিগঞ্জ থেকে কলিকাতা পর্যন্ত বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ লাগিয়ে ছিলেন। সেই সময়ের লাগানো গাছই হচ্ছে এই শিশু গাছ। কথিত গল্পে আছে ঝিনাইদাহ কালিগঞ্জের ব্যবসায়ী কালীবাবু ছিলেন মা ভক্ত। অপরদিকে কালী বাবুর মা ছিলেন কলিকাতার বেলুর মঠ আশ্রম ও স্বামী বিবেকানন্দ ভক্ত। সেখানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন কালী বাবুর মা। সে সময় রাস্তা পাকা ছিল না। ছিল না কোন যান বাহন। এক মাত্র যাওয়ার ব্যবস্থা ছিল গরুর গাড়ি ও পায়ে হাঁটা। এ জন্য মাকে নিয়ে রোদ্রুর থেকে রক্ষা পেতে গাছের ছায়া দিয়ে মাকে নিয়ে কলিকাতায় যাওয়ার জন্য ব্যবসায়ী কালীবাবু ঝিনাইদাহ কালিগঞ্জ থেকে কলিকাতা পর্যন্ত বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ রোপন করেন। সেই সময়ের লাগানো গাছ আজকের এই মৃত শিশু গাছ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন তোতা বলেন নাভারন বাজারের মৃত গাছগুলি খুবই ঝুকি পূর্ণ। তিনি বলেন যে কোন মুহূর্তে মরা গাছগুলি ভেঙ্গে পড়তে পারে । বিষয়টি তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাভারন রেলবাজার কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন বলেন, প্রতিদিন নাভারন বাজারে মরা শিশু গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ছে। পথচারী মানুষ ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। তিনি বলেন মরা গাছের ডাল ভেঙ্গে নাভারন বাজারে একজন মানুষও মারা গেছে। এ ছাড়া শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল হক মঞ্জুর বাড়ির উপরেও শিশু গাছের ডাল ভেঙ্গে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য তিনি খুব দ্রুত যশোর বেনাপোল সড়কের সকল মরা গাছ কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাভারন উত্তর বুরুজবাগান গ্রামের বিশিষ্ঠ ব্যাক্তি মোঃ শাহাজান বলেন, প্রতিদিন নাভারন বাজারে ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। কখন জানি কি হয়। তিনি বলেন যে কোন মুহূর্তে নাভারন বাজারের মরা গাছগুলি গোড়া থেকে উপড়ে বা মরা গাছের বড় বড় ডাল ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য অতি সত্বর মরা গাছগুলো না কাটলে নাভারন বাজারে চলাচল ঝুকিপূর্ণ হবে। তিনি সরকারের প্রতি মরা গাছগুলো টাকার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর জেলা পরিষদের বৃক্ষ সংরক্ষন সার্ভিয়ার আশরাফ হেজাসেন মঞ্জু বলেন, যশোর বেনাপোল মহা সড়কের রাস্তার দু’ধারে অনেক মরা ঝুকিপূর্ন গাছ রয়েছে। পরিবেশবাদীদের মামলা জনিত কারনে যা অপসরন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন খুব শিঘ্রই যশোর বেনাপোল সড়ক ৬ লেনের ঘোষনা হবে। তখন কারনে অকারনে রাস্তার প্রসার বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের পুরাতন ও মরা গাছ কাটা হবে। এ ব্যাপারে জানার জন্য শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বাব বার ০১৭৬৮ ৭৫৭৮৭৮নম্বরে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কিউএনবি/আয়শা/২১ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ৮:৪৫