সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাঙামাটির ট্যুরিজম সেক্টরে বাঙ্গালী উদ্যোক্তার খবর পেলেই আঞ্চলিকদলের হুমকি নোয়াখালীতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পড়ে গেল খালে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়ালেন শিক্ষার্থীরা নওগাঁ সরকারি কলেজে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়কের ওপর হামলা শার্শার গিলাপোলে প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত চৌগাছায় নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার চৌগাছায় জাবির-আলামিন স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত উলিপুরে ইউনিয়ন বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন চৌগাছায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যবসায়ী পলাতক ভূক্তভুগীদের মাথায় হাত বিসিএস পরীক্ষার বিষয়ে যে নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

চকরিয়ায় মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের রমরমা টোকেন ও আটক বাণিজ্য

এম রায়হান চৌধুরী  চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • Update Time : রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৪৩ Time View
এম রায়হান চৌধুরী  চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের রমরমা গাড়ি আটক ও টোকেন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। মাসিক টুকেন বাণিজ্য, চাঁদার জন্য যানবাহন আটক, টাকা পেলে ছাড় ইত্যাদি দীর্ঘদিনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। হিসাব না মিললে জুড়ে দেয়া হয় মামলা। হিসাব-নিকাশ ঠিকঠাক থাকলে ‘সাতখুন’ মাফ-এমনটি জানালেন ভুক্তভোগিরা।
ভুক্তভোগি চালক-হেলপাররা জানিয়েছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও থেকে চকরিয়া পর্যন্ত মহাসড়কে নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষার বদৌলতে চলছে জোরজুলুম। হয়রানির শিকার হচ্ছে যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। দিনে আটক করে রাতে ছাড়; রাতে আটক অবার দিনে ছাড়, এভাবে চলছে।
মূলতঃ কয়েকজন অসাধু কর্তার অনৈতিক কাজের কারণে বদনাম হচ্ছে হাইওয়ে থানা পুলিশের। সেইসাথে মাত্র কয়েকজনের অবৈধ আয়ের কারণে যানবাহন খাত থেকে প্রতিমাসে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব। তার নেপথ্যে প্রধান সিপাহসালার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন মালুমঘাট হাইওয়ে থানায় কর্মরত এএসআই হাসিব ও তার নেতৃত্ব গঠিত স্থানীয় দালাল সিন্ডিকেটরা।
 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালুমঘাট হাইওয়ে থানা এলাকার এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের বলেন, তিনচাকার যান আটক করে কোন ধরনের মামলা না দিয়ে ৭-১২ হাজার টাকা নিয়ে রাতের আঁধারে ছেড়ে দিচ্ছে। দিনরাত চক্রাকারে এ ঘটনা চলতে থাকলেও, হাইওয়ে থানা পুলিশের নেওয়া টাকাগুলো সরকার পাচ্ছে না। এমনকি তাদের এমন বেপরোয়া আটক বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পরিবহণ শ্রমিকরা।
এদিকে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের সাথে সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করলে তারা অভিযোগের সুরে জানান, স্থানীয় কয়েকজন দালালের নিয়ন্ত্রণে চলছে মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ ফাঁড়ি। তাদের মাধ্যমে মহাসড়ক থেকে বৈধ-অবৈধ গাড়ি আটক করা হয়। একেকটি গাড়ি থেকে ৭-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে রাতের আঁধারে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৈধ-অবৈধ বাছবিচার করা হয় না। কোন চালক টাকা দিতে না পারলে গাড়িগুলো ২ মাস পর্যন্ত ‘কাস্টোডি’র নামে জব্ধ করে থানায় রেখে দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম নামের এক দালালের মাধ্যমে খুটাখালী থেকে চকরিয়ায় চলাচল করা তিন চাকার প্রতিটি গাড়ি থেকে মাসিক ১৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। যে সব চালকেরা টাকা দিবে না তাদের গাড়ি আটকে রেখে মামলার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হয়।
জাহেদুল ইসলাম নামের এক সিএনজি চালক অভিযোগ করেন, অনেক দুঃখ কষ্ট করে তিনি একটি সিএনজি কিনেন। এই সিএনজির টাকায় তার সংসার চলে। সম্প্রতি তার গাড়িটি আটক করে মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। পরে ১০ হাজার টাকা দিলে তার গাড়িটি ছেড়ে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। টাকাগুলো জোগাড় করতে তার অনেক কষ্ট হয়েছে বলে জানান সে। একই অভিযোগ মোঃ রহিম নামক আরেক সিএনজি চালকের।
তিনি জানান,  কয়েকদিন আগে তার তার সিএনজি গাড়িটি আটক করে ৩ হাজার টাকা আদায় করেছে হাইওয়ে থানা পুলিশ। তাদের অভিযোগ, তিন চাকার গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে এএসআই হাসিবের নেতৃত্বে গড়ে উঠা দালাল সিন্ডিকেটের প্রধান সাইফুল ইসলাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাইওয়ে পুলিশের সাথে সম্পর্ক আছে এমন এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিন চাকার গাড়ি থেকে মাসিক আয় অন্তত ১০ লক্ষ টাকা।

কয়েকজনে মিলে টাকাগুলো ভাগবাটোয়ারা করে। নির্ধারিত টুকেনের বাইরে সড়কে গাড়ি পেলেই আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। সব দেখভাল করেন এএসআই হাসিবসহ পুলিশের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। এএসআই হাসিবের হাত ধরেই অবাধ বিচরণ দালাল সিন্ডিকেটের। এভাবে বছর খানেক ধরে এ হাইওয়ে থানা ফাঁড়িতে চলছে দালাল ও পুলিশের রমরমা কার্যক্রম। দালাল, ঘুষ, অনিয়ম, দুর্নীতি ও আটক বানিজ্য অতীতের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। পুলিশের ভয়ে এসবের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। চলমান দূর্যোগ পরিস্থিতিতেও জনসম্মুখে মহাসড়কে চলছে মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের চাঁদাবাজি।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা থেকে রাত অব্দি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে মালবাহী ও অন্যান্য গাড়ি থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন এ হাইওয়ে থানা পুলিশের কর্তারা । চকরিয়া উপজেলার মেধাকচ্ছপিয়ার ঢালা, ডুলাহাজারা স্টেশন, বনানী, সাফারি পার্ক গেইট, পুলিশ ফাঁড়ি গেইট, মালুমঘাট বাজারের উত্তরে রিংভং এলাকা এবং তারও উত্তরে মইক্ষা ঘোনা নামক পয়েন্টে বেশি হয়রানী করে বলে অভিযোগ পরিবহন শ্রমিকদের।

অন্যদিকে, মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের বেপরোয়া আটক ও টোকেন বাণিজ্য নিয়ে সচেতন মহলের প্রশ্ন- টমটম, অটোরিক্সা, সিএনজি থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ টাকা আয় হয় তা সরকারী কোষাগারে যায় কিনা? এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মালুমঘাট হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মাকসুদ আহাম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং তিনি কোর্টে স্বাক্ষী দিতে কুমিল্লায় অবস্থা করছেন বলে জানিয়েছেন। এসময় তিনি প্রতিবেদকের সাথে পরে যোগাযোগ করবেন বলে ফোন কেটে দেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৩ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ৮:২৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit