জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্রসহ বিদ্যালয়ে ঢুকে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে।এতে সহকারি দুই শিক্ষকসহ ৮জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পাশাপাশি একজন শিক্ষকসহ ২জনকে আশংকাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।সোমবার (৭ আগষ্ট) দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ জাওরানী আব্দুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়ে। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নতুন করে সংঘর্ষের আশংকা করছেন অনেকে।আহতরা হলেন, ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আশরাফুল, আব্দুল খালেক, শিউলী রানী, শহিদুল, শাহীন, জসিম। এদের মধ্যে স্কুল শিক্ষক আশরাফুল ও আব্দুল খালেককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসী জানায়, নির্বাচনী যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২৬ আগস্ট বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সকল পদে ভোট গ্রহনের জন্য তফসলী ঘোষণা করা হয়। ৩ দিনের মধ্যে মনোননয়নপত্র গ্রহন ও জমাদানের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার ছিল প্রথম দিন। স্থানীয় নুরুল হক সরকার, তার ছেলে আব্দুস সালাম শাহীনসহ সহযোগিরা হঠাৎ করে দুপুরের দিকে দেশিও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকেন এবং প্ধান শিক্ষককে তাদের বাইরে মনোনয়নপত্র বিক্রি করতে নিষেধ করেন ।এসময় ওই রুমে মনোনয়ন পত্র নেয়ার জন্য বর্তমান সভাপতি পদে থাকা দুলাল মিয়া বসে ছিলেন। প্রধান শিক্ষক তাকে মনোনয়পত্র দিতে গেলে শাহীন রামদা দিয়ে প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে কোপাতে যায়। প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে বাচাঁতে স্কুলের সহকারি শিক্ষক আশরাফুল ঠেকাতে গেলে ওই রাম দায়ের কোপ তার মাথায় গিয়ে লাগে। এতে করে রক্তাক্ত অবস্থায় কক্ষের মেঝেতে পড়ে যায় আশরাফুল হক। এসময় অন্যান্য শিক্ষককরা এগিয়ে আসলে তারা শিউলী রানীসহ কয়েকজনকে মারধর করে এবং অফিস কক্ষ ভাংচুর চালায়।
হামলা ও ভাংচুর শেষে ফেরার পথে বিদ্যালয়ের মাঠে হামলাকারীদের সাথে স্থানীয় কয়েক জনের সংঘর্ষ বাধেঁ। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়লে তারা দিকবিদিক ছুটতে থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হইনি।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘নুরুল হক ও তার ছেলে শাহীন লোকজন নিয়ে আমার কক্ষে ঢুকে হামলা করে। এতে আমি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পাই। কিন্তু আমার ২ শিক্ষকসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। কক্ষে থাকা আসবাবপত্র ভাংচুর করে মনোনয়নপত্র বিক্রির টাকাসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। এনিয়ে রাতের মধ্যে থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।
ওই স্কুলের নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা হাতীবান্ধা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওখানে মনোনয়পত্র বিক্রির প্রথম দিনই মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি।হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিউএনবি/অনিমা/৭ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১১:৫১