সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

কীভাবে কমাবেন শিশুর রাগ?

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৬৫ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : রাগ মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। তবে এর বর্হিপ্রকাশ মানুষ ভেদে আলাদা আলাদা হয়। কেউ কেউ রেগে গেলে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। আবার কেউ কেউ রেগে গেলে একদম চুপ হয়ে যান। কারো সাথে একটি কথাও বলেন না।

তবে মানুষের রাগ কিরকম হবে তা বুঝা যায় ছোটবেলা থেকেই। অনেক শিশু আছে যারা রেগে গেলে খারাপ কথা বলার পাশাপাশি অনেক সময় অন্যের গায়েও হাত তুলে বসে। এমনকি রেগে গেলে তারা জিনিসপত্র ছোঁড়াছুঁড়িও করে থাকে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের তথ্য, রাগচটা বা বেশি রাগ একদিনে হয় না, বরং একদম ছোট বয়স থেকেই এই সমস্যার বীজ রোপিত হয়। ছোট থেকে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বড় হয়ে সমস্যায় পড়তে পারে আপনার সন্তান। তাই ছোট থেকেই সন্তানের আচার আচরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত প্রত্যেক বাবা-মায়ের।

সন্তান যদি অত্যধিক রেগে যায়, এমনকী অন্যকে আঘাত করার প্রবণতা থাকে, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে তাদের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, তার কিছু উপায় জানানো হল এখানে।

১. ​রাগের কারণ বুঝুন

​বাচ্চারা কেন রাগ করছে, তা বুঝার চেষ্টা করুন সবার আগে। কোনও অভ্যাস, ঘটনা, কার্যকলাপের কারণে তারা রেগে যাচ্ছে কী না, তা খুঁজে বের করুন। কারণ জানা থাকলে তাদের রাগ শান্ত করা যাবে ও এতে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সন্তানের রাগ শান্ত হওয়ার পর তাদের সঙ্গে কথা বলুন। তাদের বোঝান যে রাগ করার আগে, অপরপক্ষের সমস্ত কথা শোনা উচিত।

২. পরিস্থিতি চিনুন

কোনও পরিস্থিতি বা ঘটনা বার বার সন্তানের রাগের কারণ হয়ে দাঁড়ালে তা দূর করার চেষ্টা করুন। কোনও কারণে সন্তান অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লে তা দূর করার চেষ্টা করুন। সন্তানের সামনে বাড়িতে লড়াই-ঝগড়া করবেন না, আবার আক্রমণাত্মক ব্যবহারও এড়িয়ে চলুন। কারণ এ সব দেখে তারা অবসাদগ্রস্ত হতে ও রেগে যেতে পারে।

৩. অন্যের অনুভূতি বোঝা

​সন্তান রেগে গিয়ে ভুল শব্দ বললে বা ভুল পদক্ষেপ করলে, তাকে তৎক্ষণাৎ আটকান। তারা যতক্ষণ রেগে থাকবে, তাদের বকাঝকা করবেন না। শান্ত হওয়ার পর বোঝান যে অপশব্দ ব্যবহার করা বা হিংস্র হওয়া উচিত নয়। এর ফলে অপর ব্যক্তি কষ্ট পেতে পারে। আবার রাগের মাথায় সে অন্যের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করে, তেমনই যদি কেউ তার সঙ্গে করে, তা হলে কেমন লাগবে, তাও নিজের সন্তানকে ভেবে দেখতে বলুন।

৪. ১ থেকে ১০ গুনতে বলুন​

​সন্তানের রাগ প্রশমিত করতে চাইলে তাকে ছোট থেকেই কয়েকটি ট্রেনিং দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম ট্রেনিং হল- ১ থেকে ১০ কাউন্ট। এই কৌশল অনুযায়ী, সন্তান খুব রেগে গেলেই তাঁকে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে বলুন। এতে সন্তানের মন রাগের পরিসর ছেড়ে সংখ্যাতত্বের দিকে মোড় নেবে। তাই ১ থেকে ১০ গোনা শেষ হওয়ার পর সন্তানের মাথা আগের তুলনায় অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে যাবে।

কীভাবে কমাবেন শিশুর রাগ?

৫. ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে বলুন​

এটাও একটা মেডিটেশন টেকনিক। এই টেকনিকের গুণেই কিন্তু গরম মাথা চটজলদি ঠান্ডা হয়ে যেতে সময় লাগে না। তাই এবার থেকে সন্তানকে রাগতে দেখলেই তাকে ধীরে ধীরে বুক ভরে শ্বাস নিতে এবং ছাড়তে বলুন। মাত্র ৩০ সেকেন্ড এই কাজটা করতে হবে।

৬. জায়গা পরিবর্তন করুন

ধরুন আপনার সন্তানের সঙ্গে তার বন্ধুর তীব্র মনোমালিন্য হয়েছে। আর এই কারণেই বন্ধুর উপর বেজায় চটে গিয়েছে আপনার ছোট্ট সোনা। এই পরিস্থিতিতে তাকে সেই জায়গা ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও অন্যত্র নিয়ে যান। এতেই দেখবেন তার মাথা ঠান্ডা হয়েছে।

৭. সন্তানকে আদর করুন

সন্তান খুব রেগে থাকলে বাবা-মা হিসাবে তাকে কাছে টেনে আনুন। তাকে কোলে বসিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিন। এতে করে অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে আসবে আপনার শিশু। বাবা-মায়ের স্নেহ-মমতাই কিন্তু তার মাথা ঠান্ডা করে দেবে বলে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। তাই এবার থেকে সন্তান রেগে গেলেই এই টেকনিক কাজে লাগান।

৮. রাগ করার খারাপ দিক বুঝিয়ে বলুন

আপনার সন্তানের যখন মন ভালো থাকে তখন তাকে জিদ বা রাগ কতটা খারাপ বিষয় তা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন। রাগ করলে সবাই কষ্ট পায় এটা তাকে বুঝানো উচিত। অতিরিক্ত রাগের কারণে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা তাকে বুঝিয়ে বলুন।

৯. বাচ্চার ভালো ব্যবহারের প্রশংসা

​আপনার সন্তান ভালো ব্যবহার করলে, তাদের প্রশংসা করতে ভুলবেন না। সমীক্ষা অনুযায়ী অভিভাবকরা বাচ্চাদের ভালো ব্যবহারের জন্য প্রশংসা করলে তাদের মনে রাগ বা কোনও নেতিবাতক চিন্তাভাবনা জন্ম নেবে না। কোনও বন্ধু বা অন্য কোনও ব্যক্তির কারণে রাগ করলে তাদের মধ্যে শীঘ্র মিটমাট করিয়ে নিন। অন্যের কারণে সন্তান কষ্ট পেলে, সেই ব্যক্তিকেও এ সম্পর্কে জানান। ভবিষ্যতে কোনও ভুল যাতে কেউ না-করে, সে বিষয় আপোস করতে বলুন তাদের।

কিউএনবি/অনিমা/০৫ অগাস্ট ২০২৩,/দুপুর ১২:৩৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit