আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তীব্র তাপানলে পোড়া পৃথিবীতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র এসিই সবচেয়ে বেশি আপন হয়ে উঠেছে মানুষের। যন্ত্রটির ক্ষতিকর দিক থাকলেও গরমে ঝলসে যাওয়া সাম্প্রতিক পৃথিবীর জনসংখ্যা রক্ষায় এর ভূমিকাও রয়েছে অনেক।
গবেষণায় দেখা যায়, এসিতে বসবাসকারীদের জন্য তাপজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কমে যায়।
তাপমাত্রা ও আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এসিও। সারা বিশ্বে এসির সংখ্যা আজ প্রায় দুই বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল দেশ। জনসংখ্যায় হিমশিম খাওয়া দেশগুলো তাপের কারণে আরও অস্থির হয়ে যাচ্ছে।
এজন্য দেশগুলোতে এসি ব্যবহারের ব্যাপক প্রবণতা দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা অনুসারে, ভারতে ২০৫০ সালের মধ্যে এসি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ১০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে বাড়তে পারে।
বিশ্বব্যাপী গরম জলবায়ুতে বসবাসকারী ৩.৫ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশের বাড়িতে এসি আছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িতে এসি আছে।
গরমের প্রকটে এসি যেমন মানুষকে স্বস্তি দিচ্ছে, তেমনি মানুষকে ফেলছে হুমকির মুখে। কয়েক দশক ধরে এসি প্রায় একচেটিয়াভাবে ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (সিএফসি) বা হাইড্রো ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (এইচসিএফসি) গ্যাসের ওপর চলছে। যেগুলো উষ্ণায়ন প্রভাবের ক্ষেত্রে কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে ১০ গুণ বেশি খারাপ বলে ধারণা করা হয়।
গরম বাতাস বের করে দেওয়ার মাধ্যমে শহরগুলোকে আরও গরম করে তোলে। এসি ব্যবহারের আরেক সমস্যা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপরও চাপের সৃষ্টি হওয়া। এর ফলে বায়ুদূষণ ঘটে।
এবারের তীব্র গরমে এসি যখন একমাত্র ভরসা তখন এর সমস্যা সমাধানেও নেমেছেন অনেকেই। ভেনিসের কা ফোসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত অর্থনীতির অধ্যাপক এনরিকা ডি সিয়ান বলেন, পরিপূরক পদ্ধতির সঙ্গে এসি ব্যবহার করা অপরিহার্য।
আরও বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে ও জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করতে হবে। যাতে এসি দ্বারা ব্যবহৃত শক্তি কম নির্গমনের দিকে পরিচালিত হয়। কিছু কোম্পানি, কম শক্তি খরচ করে এমন সাশ্রয়ী মূল্যের এসি তৈরি ও ইনস্টল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির মতে, এসি ইউনিটে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেন্ট গ্যাসের বিকল্প অনুসন্ধান করা।
যেমন-অ্যামোনিয়া গ্যাস ব্যবহার করা, যার কোনো গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব নেই। সংস্থাটি আরও একটি গ্যাসের নাম উল্লেখ করে- প্রোপেন গ্যাস। যার নির্গমন মিথেনের চেয়ে অনেক কম।
কিউএনবি/অনিমা/০২ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১১:৩৬