আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার ১১ নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী সরকারি একটি লটারির টিকিট কেনার জন্য গত জুনে অর্থ সংগ্রহ করেন। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তারা সবাই চাঁদা দিয়ে ওই টিকিট কেনার পরিকল্পনা করেন। গত সপ্তাহে তাদের সবার কেনা ওই টিকিট ১০ কোটি রুপির জ্যাকপট জিতেছে।
লটারির এই একটি টিকিটই যে রাতারাতি তাদের ভাগ্য বদলে দেবে, তা পুরস্কার জয়ের আগে বিশ্বাস করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভবই ছিল। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরালার মালাপ্পুরম জেলার পারাপ্পানগাদি শহরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে অজৈব বর্জ্য সংগ্রহ করেন ভাগ্যজয়ী এই ১১জন । এ কাজের জন্য বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে দৈনিক প্রায় ২৫০ রুপি মজুরি পান প্রত্যেকে। এছাড়া মাঝে মাঝে নারীদের সংগ্রহ করা বর্জ্য থেকে পাওয়া কিছু ভাঙরি পণ্য বিক্রি করে আলাদাভাবে কিছু অর্থও তাদের দেয় স্থানীয় করপোরেশন।
তবে অল্প এই অর্থ দিয়ে তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই সন্তানদের লেখাপড়া ও সাংসারিক খরচ চালানোর জন্য এই পরিশ্রমী নারীদের বেশিরভাগই অন্যদের কাছ থেকে অর্থ ধার বা ঋণ নিয়ে থাকেন। তাই ভাগ্য ফেরানোর আশায় তারা মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কেনার জন্য এক জোট হতেন। সবাই মিলে অর্থ ভাগাভাগি করে একটি টিকিট কিনতেন। এই ১১ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর দলের হয়ে প্রায়ই টিকিট কেনার কাজ করেন এমপি রাধা। ভারতের অনেক রাজ্যে লটারি অবৈধ। তবে কেরালার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি লটারি কর্মসূচি রয়েছে। গত মাসে তারা ১১ জন মিলে ২৫০ রুপির মৌসুমি ‘বাম্পার প্রাইজ’ লটারি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়।
রাধা যখন টিকিট কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল, তখন এদের মধ্যে ৭২ বছর বয়সী কুত্তিমালুর কাছে টিকিটের ভাগ নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। তখন দলের অরেক সদস্য চেরুমানিল বেবি তার কাছে থাকা ২৫ রুপি থেকে অর্ধেক রুপি তাকে ধার দিতে চায়। পরে তারা দুজন টিকিটের ভাগের জন্য সাড়ে ১২ রুপি করে দেন এবং অন্য ৯ জন দেন ২৫ রুপি করে। এই নারীদের একজন তার স্বামীকে লটারির ফলাফল দেখার জন্য বলেছিলেন। ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার একদিন পর তারা জানতে পারেন যে তারা লটারি জিতেছেন।
এদিকে রাধা বলেন, আমরা বাম্পার পুরস্কারের জন্য চতুর্থবারের মতো একটি টিকিট কিনেছিলাম। চতুর্থবারে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে। কুত্তিমালু বলেন, আমরা লটারিতে কিছু জিতলে সমানভাবে ভাগ করে নেব বলে সবাই রাজি হয়ে যাই। এত বড় অঙ্কের পুরস্কার জিতব তা আমরা আশা করিনি! অন্যদিকে ৬২ বছর বয়সী বেবি বলেন, তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তাদের দল জ্যাকপট জিতেছে। প্রসঙ্গত, কেরালায় বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান যেমন উৎসবের জন্য ‘বাম্পার প্রাইজ’ লটারি ছাড়া হয়।
কিউএনবি/আয়শা/০২ অগাস্ট ২০২৩,/বিকাল ৩:৩৪