শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

জাহাজে পা রাখাও নিষেধ নারী সেনাদের

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩
  • ৯৯ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামী বছর সাবমেরিনে নারী নৌসেনা নিয়োগ করে দেশে প্রথমবারের মতো ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। এতে করে নারীরা সাবমেরিন পরিচালনা করছে এমন দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া হবে বিশ্বের ১৪তম দেশ। 

অথচ পাশের দেশ উত্তর কোরিয়ার চিত্র সম্পূর্ণ উলটো। দেশটির নৌবাহিনীতে চলে নারী-পুরুষ বিপুল বৈষম্য। এমনকি জাহাজে পা রাখাও নিষেধ নারী সেনাদের। 

২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর নারীদের সেনাবাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। ইয়োনহ্যাপ নিউজ।

২০১৭ সালের প্রথমদিকে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের দেওয়া আদেশের পর আলোচনা ও তদন্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। আদেশের অধীনে উত্তর কোরিয়ার জেনারেল পলিটিক্যাল ব্যুরো (এচই) ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিজার্ভ ফোর্সেস বিভাগ বিশেষভাবে নারী সৈন্যদের নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বিশেষ সভা আহ্বান করেছিল।

সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অনেক নারীর পুরুষ শাসিত বিশেষ যুদ্ধ প্রকৌশল  ইউনিটে যোগদানের পর থেকে উদ্ভূত অস্বস্তির অভিযোগ তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনটিতে। 

বলা হয়, ‘প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন হয় এমন পদে কর্মরত নারীরা প্রায়ই মনে করেন-পুরুষ শাসিত সামরিক সংস্কৃতিতে অবাঞ্ছিত আচরণ আর ক্রমাগত চাপের কারণে তারা একটি অন্যায্য অবস্থানে রয়েছে।’

একই দশা উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীতেও। দেশটির নৌবাহিনীতে নারীদের সাবমেরিনসহ যে কোনো নৌযানে পা রাখা নিষিদ্ধ। এমনকি যাত্রী হিসাবে চড়তেও তাদের বাধা দেওয়া হয়। ১৯৬০-এর দশকে কিম ইল সুং-এর শাসনামল থেকে এই ঐতিহ্যটি চালু হয়। প্রকৃতপক্ষে জাহাজে নারীদের নিষেধাজ্ঞার প্রধান ভিত্তি হলো একটি বহুল প্রচলিত অকথ্য কুসংস্কার। 

এতে বিশ্বাস করা হয়-‘কোনো নারী নৌকায় চড়লে সমুদ্রের আত্মা বিরক্ত হবে। আর তা ক্ষতি করবে নাবিকদের।’ 

প্রতিবেদনে নারী নৌসেনারা জানান, ‘মোট সৈন্যের তুলনায় তাদের সংখ্যা কম। তারা জাহাজে চড়তে পারেন না। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ সরঞ্জামগুলো কীভাবে পরিচালনা করতে হয় সে সম্পর্কেও তাদের ধারণা নেই। আর সে কারণে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ করেন। একই সঙ্গে মনে করে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।’

প্রতি বছর জুন-আগস্ট এই দুই মাস নারী-পুরুণ নির্বিশেষে নৌবাহিনীর সব সদস্যের সাঁতারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর সে সময় পুরুষ সৈন্যদের উপহাসের স্বীকার হতে হয় তাদের। পুরুষ সৈন্যরা তাদের প্রশ্ন করেন-কখনোই তাদের সমুদ্রে পাঠানো হবে না জেনেও কেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নারীরা নৌবাহিনীর সদস্য হলেও তাদের পরিধান করতে হতো সেনাবাহিনীর ইউনিফরম। আর এতে পুরুষ সমকক্ষদের তুলনায় তারা পেশাদার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মনে হয় তাদের। প্রতিবেদন অনুযায়ী, নৌবাহিনীর স্বতন্ত্র ‘নাবিক স্যুট’ পরিধান করতে না পারার কারণে অনেক নারী আত্মসম্মান ও অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলে।

প্রতিবেদন পাওয়ার পর জেনারেল পলিটিক্যাল ব্যুরো নারী সৈন্যদের অভিযোগের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে। একই সঙ্গে ‘সব নারী সৈনিকদের পিতৃভূমির সুরক্ষার জন্য নিয়োগকৃত সৈনিক হিসাবে তাদের কর্তব্যের প্রতি অনুগত থাকার’ পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে প্রতিবেদনটিতে উত্থাপিত সমস্যার কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি।

উত্তর কোরিয়ার বিমানবাহিনী নারী ফাইটার পাইলট মোতায়েন করেছে। এমনকি নারীরা সামরিক বাহিনীতেও যোগদান করতে পারে। 

কিউএনবি/অনিমা/২৬ জুলাই ২০২৩,/রাত ১০:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit