আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনই মণিপুর নিয়ে উত্তাল হতে চলেছে ভারতীয় সংসদ। বিরোধীরা এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদির বিবৃতি দাবি করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার মণিপুর নিয়ে মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদি।
মোদি বলেন, আমি জাতিকে আশ্বস্ত করতে চাই, কোনো অপরাধীকে রেহাই দেওয়া হবে না। আইন সর্বশক্তিমান। নিজের পথে আইন চলবে। মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা কখনও ক্ষমা করা যাবে না। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। মোদি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মোদি বলেন, আমার হৃদয় ব্যথিত এবং রাগে ভরে আছে। মণিপুরের যে ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে তা যেকোনো সভ্য সমাজের জন্যই লজ্জাজনক। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, তার রাজ্যে যাতে আইন-শৃঙ্খলা আরও জোরদার করা হয়। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তার দিকটি যেন সুনিশ্চিত করা হয়। এবং এক্ষেত্রে যেন কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজস্থান হোক বা মণিপুর, বা ছত্তিশগড়… দেশের যে কোনো কোণে যে কোনো ঘটনা হোক- রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।
বাদল অধিবেশনের আগে সংসদের সামনে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেছেন, গতকাল সর্বদলীয় বৈঠকে বলা হয়েছিল যে সরকার মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। স্পিকার ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান আলোচনার তারিখ ঠিক করবেন।
অন্যদিকে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, আমি গতকালও এই বিষয়ে (মণিপুর ইস্যু) কথা বলেছি। বিরোধীরা সংসদে কাজ করতে চায় না। তাই তারা আগে থেকেই মুলতুবি প্রস্তাব আনছে। তারা আলোচনার দাবি করেছিল এবং আমরা হ্যাঁ বলেছি। তারা এখন নতুন অজুহাত খুঁজছে। এটা ঠিক নয়।
এদিকে শাসকদল মণিপুর নিয়ে আলোচনার কথা বললেও সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। এ নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, আজ আমরা সংসদে মণিপুরের বিষয়টি উত্থাপন করছি। নোটিশও দিয়েছি। আমরা দেখব, রাজ্যসভায় আমাদের চেয়ারম্যান এই বিষয়টা উত্থাপন করতে দেবেন কি না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নীরব। তাদের ৩৮টি দলকে (এনডিএ বৈঠকের জন্য) ডাকার সময় আছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেখানে (মণিপুরে) যাওয়ার সময় নেই।
এদিকে আসামের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ এই ইস্যুতে বলেন, গতকাল আমরা মণিপুরের যে ভিজ্যুয়ালগুলো দেখেছি, তা আমাদের হতবাক করেছে। আমি মনে করি, প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর উচিত সংসদে এসে মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দেওয়া এবং শান্তির আবেদন জানানো। তার সরকারের ব্যর্থতার জন্য মণিপুরের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির… তাহলে হয়তো সেই রাজ্যের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে।
মণিপুরে গত ৪ মে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছিল রাস্তায়। তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণও করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার ভিডিও নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার করে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি কথা বলেন এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে। আর এবার কেন্দ্রের পক্ষে সেই ভিডিও সরানোর নির্দেশ গেল টুইটারের কাছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
কিউএনবি/আয়শা/২০ জুলাই ২০২৩,/বিকাল ৫:২৫