সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২৩ অপরাহ্ন

হাদিসে কঠোর আচরণ পরিহারের নির্দেশ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩
  • ১৮২ Time View

ডেস্ক নিউজ : ইসলাম শান্তির ধর্ম, সহজ ধর্ম। এতে কঠোরতা করা নিষিদ্ধ। আমাদের নবীজি (সা.) কোনো বিষয়ে কঠোরতা পছন্দ করতেন না। তাই তিনি সাহাবায়ে কেরামকে কোমলতা করার নির্দেশ দিতেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) মুআজ ও আবু মুসা (রা.)-কে ইয়েমেনে প্রেরণ করেন এবং এই মর্মে আদেশ দেন, ‘মানুষের সঙ্গে কোমল আচরণ করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৩০৩৮)

দয়াময় মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য কোমল হয়েছেন। তিনি এমন কোনো বিষয় বান্দার ওপর চাপিয়ে দেননি, যা তাদের জন্য অসম্ভব। সুরা বাকারায় রোজাসংক্রান্ত আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘…আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫) অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর সংকীর্ণতা চাপিয়ে দিতে চান না, তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান আর তোমাদের প্রতি তাঁর নিয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৬)

মানুষের প্রতি কোমলতার বিষয়টি নবীজি (সা.) এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে কোনো বিষয়ে সহজ কোনো পন্থা থাকলে তিনি সেটাই গ্রহণ করতেন। এবং সাহাবায়ে কেরামকে কোথাও কোনো অঞ্চলে দায়িত্ব দেওয়ার সময় মানুষের সঙ্গে কোমলতা করার নির্দেশ দিতেন। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দুটি পন্থা সামনে আসে, তবে তুলনামূলক সহজটা গ্রহণ করার নির্দেশ দিতেন, যদি তা গুনাহের পর্যায়ে না যায়। এমন জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রেও তিনি মুসল্লিদের কথা বিবেচনা করার নির্দেশ দিতেন। এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, মুআজ (রা.) আপনার সঙ্গে নামাজ আদায় শেষে ফিরে গিয়ে আমাদের নামাজের ইমামতি করেন। আমরা মেহনতি শ্রমিক লোক এবং নিজেরাই ক্ষেতের কাজকর্ম করে থাকি। অথচ মুআজ (রা.) আমাদের নামাজে ইমামতিকালে সুরা বাকারা পড়েন (অর্থাৎ দীর্ঘ সুরা পাঠ করে থাকেন)।

এভাবে ফজরের নামাজেও বেশি বড় সুরা পড়ার কারণে নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামের ওপর খুব রাগান্বিত হয়েছিলেন এবং তাঁদের সতর্ক করেছিলেন। আবু মাসউদ আনসারি (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর শপথ! আমি অমুক ব্যক্তির কারণে ফজরের জামাতে হাজির হই না। কেননা, তিনি আমাদের নিয়ে দীর্ঘ নামাজ আদায় করেন। আবু মাসউদ (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে কোনো ওয়াজে সে দিনের মতো বেশি রাগান্বিত হতে আর দেখিনি। এরপর তিনি বলেন, হে লোক সকল, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিতৃষ্ণার সৃষ্টিকারী আছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে কেউ লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করবে, সে যেন সংক্ষিপ্ত করে। কারণ তাদের মধ্যে আছে বয়স্ক, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত মানুষ। (বুখারি, হাদিস : ৭১৫৯)

এ জন্য আমাদের উচিত, দ্বিনি বিষয়ে এমন কোনো কঠোরতা না করা, যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও নিজের ওপর কঠোরতা চাপিয়ে নেওয়া ঠিক নয়; বরং সহজ কোনো জায়েজ পন্থা থাকলে সেটাই অবলম্বন করা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বিন সহজ। দ্বিন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বিন তার ওপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং (মধ্যপন্থার) কাছে থাকো, আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে (ইবাদতসহ) সাহায্য চাও।’  (বুখারি, হাদিস : ৩৯)

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৩ জুলাই ২০২৩,/রাত ৮:৫৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit