স্পোর্টস ডেস্ক : রূপকথার মতো জয়, প্রথম সব সাফল্য আর যত অর্জন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছবির ফ্রেম ভরিয়ে তুলবে। তার মধ্যে একটি ছবি হয়ে থাকবে চির অম্লান। নাহ, তা কোনো জয়ের ছবি নয়, কোনো ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত অর্জনেরও না। তা পাঁচ ক্রিকেটারের একটি নিরেট সাধারণ ছবি।
২০১৮ সালে তোলা সেই ছবি সাধারণ দেখতে হলেও এর মধ্যে আছে অন্যরকম গল্প। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে কক্ষপথে তুলে আনা, ক্রিকেট মানচিত্রে শক্ত করে তোলার কারিগররা আছেন ওই ছবিতে। বাম থেকে বিশ্বসেরা সাকিব আল হাসান, সেরা অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম, সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। স্মৃতির মানসপটে যেমন ধুলো পড়ে, বইয়ের পাতা যেমন মলিন হয়ে যায় তেমনি সেই ছবি রঙ হারিয়েছে ক্রমে। শুরুতে ধূসর হয়েছে মাশরাফীর ছবি। এরপর নানা ফরম্যাট থেকে মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক হয়ে এবার পুরোপুরি দূর হয়ে গেল তামিম ইকবালের ছবি।
সবার প্রথমে বিদায় দিতে হয়েছে মাশরাফীকে। অবশ্য আনুষ্ঠানিক বিদায় নয়। সবশেষ ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মোহাম্মদ রফিক। ওই টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শততম টেস্ট উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও দেখান এই বাঁহাতি। এরপর মাঠের সবুজ রঙে সাদা বা রঙিন পোশাক পরে উজ্জ্বল হয়ে মাঠ ছাড়ার নজির নেই কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের। হাঁ, অগোচরে হয়েছে, অনানুষ্ঠানিকভাবে। যেমন ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পান্ডবদের সবচেয়ে বড়জন মাশরাফীর বিদায় হয়েছিল অনাড়ম্বর।
এরপর বিদায়ের সুর বেজেছে মাহমুদউল্লাহর। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিয়ান বোর্ডের ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে বিদায় নেন টেস্ট থেকে। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে সেঞ্চুরি করে অবসরে যান। শুধু সতীর্থদেরই শেষ টেস্ট খেলার কথা বলেছিলেন তাই দলের সবাই মিলে গার্ড অব অনার দেয় মাহমুদউল্লাহকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার টেস্ট অবসর নিয়ে বিসিবি বা মাহমুদউল্লাহ কেউই কিছু বলেননি। আর গত ইংল্যান্ড সিরিজের পর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল থেকেও নীরবে সরিয়ে দেওয়া হয় মাহমুদউল্লাহকে। দলে সুযোগ না পাওয়া এই অলরাউন্ডার ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার আশায় আছেন।
এরপর ২০২২ এশিয়া কাপের পর টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেন মুশফিকুর রহিম। বিশ্বকাপ দলে থাকছেন না আঁচ করতে পেরে আগেই অবসরের ঘোষণা দেন এই ফরম্যাট থেকে। অবশ্য ওয়ানডে ও টেস্টে তার ওপর এখনো পূর্ণ আস্থা আছে দলের। সবশেষে এবং সবচেয়ে আকস্মিকভাবে বিদায় নিয়েছেন তামিম। বাকিরা এক দুই ফরম্যাটকে বিদায় বলেছেন। আর অন্যগুলোতে উপেক্ষার শিকার হয়ে বাইরে থেকেছেন।
কিন্তু তামিম এসব সহ্য করতে চাননি হয়তো-বা। তাই কাল সংবাদ সম্মেলন করে একসঙ্গে টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। বাকি আছেন শুধু সাকিব। একমাত্র তার কাঁধেই হয়তো আরও কিছুদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে পান্ডব নামের চলটা থাকবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ জুলাই ২০২৩,/বিকাল ৩:০৪