ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ,প্রক্টর, রেজিস্ট্রার এবং হলের প্রভোস্ট কে রেজিস্ট্রার ডাকযোগে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে ঐ হলের এক আবাসিক ছাত্র। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম জালাল আহমদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র।গত ৫ জুন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট তাজুল ইসলামের মাধ্যমে এই উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি। আজ ৭ জুন(২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ) উক্ত উকিল নোটিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরে পৌঁছেছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হবে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
জানা যায়, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ছাত্র জালাল কে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের সুপারিশে ঐ বছরের নভেম্বর মাস থেকে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৫৮ নাম্বার রুম বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ঐ রুমে থাকা একজন সিনিয়র ছাত্রের অনুরোধে এবং তারই সমঝোতায় ৩৫১ রুমে থাকতে দেওয়া হয়।কিছুদিন পর তাকে ৪৫৮ নাম্বার রুমের পরিবর্তে ৪৬২ নাম্বার রুম বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ঐ রুমে ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম রসুল বিপ্লব অবৈধভাবে ক্ষমতার জোরে অবস্থান করায় তিনি তার রুমে উঠতে পারে নি। ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে ঐ বছরের ৪ মার্চ দিবাগত রাতে “কোটা সংস্কার” আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে এবং ছাত্রদল কর্মী” হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে ৩৫১ নাম্বার রুম থেকে মারধর করে জোরপূর্বক বের করে দিয়েছিল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ঐ ঘটনার বিচার চেয়ে হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে পেতে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিলেও আজ পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য হলের প্রভোস্ট , বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর বার বার আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত তাকে রুমটি বুঝিয়ে দেয়া হয় নি।গত বছরের ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনে ভর্তির সময় আমি হলের আবাসিক ফি পরিশোধ করার পরও রহস্যজনক কারণে তাকে হলের আবাসিক কার্ড না দেওয়ায়
গত ২৯ আগস্ট আমার হলের আবাসিক কার্ড নবায়ন করার জন্য হলের প্রভোস্ট বরাবর লিখিত আবেদন করলেও তার আইডি কার্ড নবায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয় নি। আবাসিক কার্ড না দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি। হলের আবাসিক কার্ড না দেওয়ায় তিনি ২০১৯-২০ সেশনে প্রশাসন কর্তৃক মওকুফকৃত পরিবহন এবং আবাসিক ফি ফেরত পাচ্ছেন না। সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন চাকরিতে বর্তমান ঠিকানা হিসেবে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের নাম দিয়েছে।যেমন হলের থাকতে না পারার কারণে তাকে না পেয়ে তার চিঠি- পত্র ফেরত যাচ্ছে।উকিল নোটিশ পাঠানো শিক্ষার্থী জালাল আহমদ জানান, “আমার পিতা -মাতা কেউই পৃথিবীতে বেঁচে নেই।ঢাকা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে তার পক্ষে থাকা কষ্টকর।এই বয়সে পরিবারের বড় ভাই থেকে ৮-৯ হাজার টাকা এনে চলতে হচ্ছে। এটা আমার পরিবারের জন্য বোঝা এবং আমার জন্য লজ্জাজনক বিষয়। তিনি আরো বলেন, আমি “দৈনিক আমার বার্তা” পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছি। সংবাদ সংগ্রহ করতে আমাকে নিয়মিত ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। সাংবাদিকতা ছাড়াও ক্যাম্পাস এবং হলের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য ।হলে থাকতে না পারার কারণে আমার একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি এক্সট্রা কু- কারিকুলামের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।তাই হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি।একই সাথে হল থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দায়ের করা হবে”।
কিউএনবি/অনিমা/০৮ জুন ২০২৩,/দুপুর ২:০১