শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩১ অপরাহ্ন

রমজানে সংঘটিত ঐতিহাসিক ৬ ঘটনা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩
  • ১০৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : রমজান শুধু ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন হওয়ার মাস নয়, বরং রমজান দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ারও মাস। পবিত্র এই মাসে মুসলিম জাতি বহু আগ্রাসী শক্তিকে প্রতিহত করে স্বদেশ রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ মাসে আল্লাহর সাহায্যে তারা ঐতিহাসিক বহু বিজয় লাভ করেছে। ইসলামের ইতিহাসের প্রথম উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ বদর রমজানেই সংঘটিত হয়েছিল। রমজানেই মুসলিমরা পৌত্তলিকদের কবজা থেকে পবিত্র ভূমি মক্কাকে উদ্ধার করেছিল। রমজানে সংঘটিত এমন কয়েকটি ঐতিহাসিক যুদ্ধের বিবরণ তুলে ধরা হলো।

১. বদর যুদ্ধ : দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এটা ছিল মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। মহানবী (সা.) আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বাধীন একটি বাণিজ্য কাফেলাকে আটক করতে চেয়েছিলেন। তিনি তা করতে চেয়েছিলেন হিজরতের পর মক্কার কুরাইশদের নানামুখী ষড়যন্ত্র, মদিনা থেকে মুসলমানদের বের করে দেওয়ার অন্যায় চাপ, মদিনার উপকণ্ঠে এসে লুটতরাজ ইত্যাদি কারণে। কিন্তু আবু সুফিয়ানের কাফেলা রাস্তা পরিবর্তন করে নিরাপদে মক্কায় পৌঁছে যায়। মক্কার মুশরিকরা এটাকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে মদিনায় সামরিক অভিযান চালায়। সহস্রাধিক সেনার কুরাইশি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৩১৩ সদস্যের মুসলিম বাহিনী বিজয় লাভ করে। কুরাইশের বহু শীর্ষ নেতা নিহত হয়। বদর যুদ্ধের বিজয় মদিনায় সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করে।

৩. তাবুক যুদ্ধ : মক্কা বিজয় ও হুনাইনে মুসলমানদের বড় বিজয় আবরের ইসলামবিরোধী শক্তিকে হতাশ করেছিল। যখন তারা বুঝল তাদের পক্ষে মুসলমানদের প্রতিহত করা সম্ভব নয়, তখন তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ চাচ্ছিল। তাদের মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছিল আউস গোত্রের নেতা ও খ্রিস্টান ধর্মীয় গুরু আবু আমের। সে সিরিয়া চলে যায় এবং সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থান করে রোম সম্রাটকে মদিনায় আক্রমণ করতে প্ররোচিত করে। তাঁর নির্দেশনায় মুনাফিকরা কোবা মসজিদের অদূরে ‘মসজিদে জিরার’ নির্মাণ করে। নবম হিজরিতে মহানবী (সা.) সংবাদ পান, মদিনায় আক্রমণের উদ্দেশ্যে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস ৪০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করেছে এবং তাদের অগ্রবর্তী দল সিরিয়ার বালকা এলাকায় পৌঁছে গেছে। নবম হিজরির রজব মাসে মহানবী (সা.) তাদের প্রতিহত করতে অভিযান শুরু করেন। তাবুকে তিনি ২০ দিন অপেক্ষা করে রমজানের শেষাংশে মদিনায় ফিরে আসেন। ৩০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে নবী (সা.) তাবুক অভিমুখে বের হন। এটা ছিল তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় সেনা অভিযান। আরব উপদ্বীপে মুসলমানের প্রভাব ও প্রতিপত্তির চূড়ান্ত ধাপ ছিল তাবুক যুদ্ধ। তাবুক যুদ্ধের পর আরবের পৌত্তলিকসহ মুসলমানের অন্যান্য শত্রুরা সাহস হারিয়ে ফেলে এবং আরবরা সব দ্বিধা ত্যাগ করে দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে থাকে।

৪. বুওয়াইবের যুদ্ধ : আবু বকর (রা.) মুসলিম সেনাপতি মুসান্না বিন হারিসা (রা.)-কে ইরাক সীমান্তে নিযুক্ত করে রেখেছিলেন। তাঁর খেলাফতের শুরুতে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল তা স্তিমিত হয়ে এলে তিনি ইরাক অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে তিনি মুসান্না বিন হারিসা (রা.)-এর বাহিনীতে সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির নির্দেশ দেন। সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির সংবাদ পেয়ে পারস্য সম্রাট সেনাপতি মেহরানের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী ইরাক সীমান্তে প্রেরণ করেন। উভয় বাহিনী বর্তমান কুফার নিকটবর্তী বুওয়াইব নামক স্থানে মুখোমুখি হয়। ১৩ হিজরির রমজানে উভয় বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর মুসলিম বাহিনী পারস্য বাহিনীকে পরাজিত করে। বুওয়াইবের বিজয় মুসলিম ভূখণ্ডকে পারস্য বাহিনীর আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছিল এবং মুসলমানদের ইরাক ও পারস্য বিজয়ের পথ উন্মুক্ত করেছিল।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৬ মার্চ ২০২৩,/রাত ৯:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit