শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

আমরা দেখেছি রেল নিয়ে নানা খেলা চলছে: প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৮২ Time View

ডেস্ক নিউজ : রেল যোগাযোগকে অকার্যকর করার জন্য অতীতের সরকারগুলোর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,  আমরা দেখেছি রেল নিয়ে নানা খেলা চলছে। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি সামরিক স্বৈরশাসকরা এদেশের কোন মঙ্গল বা উন্নতি চায় নি। যার কারণে সাধারণ মানুষের যাত্রী পরিবহনের যে কয়টা মাধ্যম ছিল একে একে তার সবই ধ্বংস করার চেষ্টা করে। এমনকি রেল লাভজনক নয়, এই অজুহাত তুলে রেলকেও বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। রেলের লোকবল গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় অনেক রেল লাইনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী তখনই এটা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩টি প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ৬৯ দশমিক ২০ কি.মি. রেলপথে রূপপুর (ঈশ্বরদী), শশীদল (কুমিল্লা) এবং জয়দেবপুর (গাজীপুর) স্টেশন থেকে যুগপৎভাবে ট্রেন চলাচল এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

সরকার প্রধান বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুতে রেলপথ সংযোগ স্থাপনসহ রেলকে পুণর্গঠনের পদক্ষেপ নেয়।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় বার সরকারে এসে তার সরকার রেলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করে। কারণ, রেল মন্ত্রণালয় সড়কের সঙ্গে থাকায় অধিকাংশ বরাদ্দই সেখানে চলে যেত। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে তার সরকার ৬৫০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজকে ডুয়ালগেজে রূপান্তর এবং ১ হাজার ২৯৭ কিলোমিটার লাইন পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ করেছে। ১২৬ নতুন স্টেশন ভবন ও ২২৩টি স্টেশন ভবন পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ করেছে। পাশাপাশি ৭৩২টি নতুন রেলসেতু, ৭৭৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ এবং ৫০টি ব্রডগেজ ও ৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা ১০৬টি লোকোমোটিভ, ২০ সেট ডিইএমইউ, ৫৩৫টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ এবং ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করেছি। ১৩০টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছি। ইতোমধ্যে ৪৪টি নতুন এবং বর্ধিত রুটে মিতালী এক্সপ্রেসসহ মোট ১৪২টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। 

দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের লক্ষে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প তার সরকার বাস্তবায়ন করছে— জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকা থেকে যশোরের রূপদিয়া ও সিঙ্গিয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য দুটি অগ্রাধিকার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু, খুলনা-মোংলা ব্রডগেজ রেললাইন, 
আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, তার সরকার নতুন নতুন রেল লাইন করে যাচ্ছে যাতে সারা বাংলাদেশে একটি রেল যোগাযোগের নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।

সরকার রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ‘সিগন্যালিংসহ রেল লাইন সংস্কার ও নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যার আওতায় লুপ-লাইনসহ মোট ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক, রূপপুর রেলওয়ে স্টেশন ভবন, ৭টি কালভার্ট, ১৩টি লেভেল ক্রসিং গেট এবং সিগন্যালিং-টেলিকম কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এর ফলে প্রকল্প এলাকার সঙ্গে দেশের অন্যান্য স্থানের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলো।

তার সরকার ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরকে ডাবল-লাইনে উন্নীত করার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিপূর্বে এই করিডোরের ৩২১ কিলোমিটারের মধ্যে ২৪৯ কলোমিটার ডাবল-লাইন নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। অবশিষ্ট ৭২ কিলোমিটার ডাবল-লাইন নির্মাণের উদ্দেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেস্ট ব্যাংক এবং নিজস্ব অর্থায়নে ‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া লাকসাম-কুমিল্লা ট্রেন চলাচল চালু করা হয়েছে। এখন শশীদল হতে রাজাপুর এবং কসবা হতে মন্দবাগ পর্যন্ত রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে যা আজকে উদ্বোধন করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ৩৩ কিলোমিটার রুটে ডাবল লাইন এ বছরের জুনে সমাপ্ত হবে ইনশাআল্লাহ। 
 

কিউএনবি/অনিমা/০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৫:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit