লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : সব মানুষই সফল হতে চায়। সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির একটি। এ কথা সবাই জানে, সময়কে ব্যক্তিগত উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারলে ইতিবাচক ফল আসে জীবনে। অনেকে দ্রুত সময়ে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারেন। কারণ তারা জানেন, প্রতিযোগিতা সব সময়ই থাকে। তাই তারা সফল হওয়ার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ক্যারিয়ারে উন্নতি লাভ করার কার্যকরী উপায়ের একটি হলো বই পড়া। বই আপনার দক্ষতা, জ্ঞান এবং মানসিকতা উন্নত করবে। এর মাধ্যমে আপনি যে কৌশলগত জ্ঞান অর্জন করবেন তা ক্যারিয়ারে আপনাকে এগিয়ে রাখবে।
‘দ্য পাওয়ার অব নাও’
‘দ্য পাওয়ার অব নাও’ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও বিখ্যাত একটি সেলফ হেল্প গাইড। বইটি কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাঁচতে হয় এবং শান্তি, সুখ এবং স্বচ্ছতা খুঁজে পাওয়া যায় তা শেখাবে। যারা মননশীলতা গড়ে তুলতে এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে চাপ দূর করতে চান তাদের জন্য এই বইটি সেরা পছন্দ হতে পারে। এই বইটি নিজেকে খুঁজে পেতে সাহায্য করার পাশাপাশি জীবনের প্রতিটি মূহুর্তকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে সাহায্য করবে।
তরুণ বয়সে অনেকের মতো লেখক একার্ট টলিও অস্থিরতা এবং হতাশায় ভুগছিলেন। এমনকি বেশ কয়েকবার আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছিলেন। তবে বয়স যখন ২৯ বছর, তিনি এমন কিছু খুঁজে পান–যা তার পুরো জীবনটাই বদলে দেয়। তবে পুরো ব্যাপারটি বুঝতে তার আরও কয়েক বছর লেগেছিল। দ্য পাওয়ার অব নাও বইতে তিনি তার সেই জীবন বদলে দেওয়া আবিষ্কারের কথাই ধাপে ধাপে বর্ণনা করেছেন, যাতে অন্যরাও তা থেকে উপকৃত হতে পারে।
‘দ্য ট্যালেন্ট কোড’
এ বইটি প্রতিভার পেছনে থাকা বিজ্ঞান এবং কীভাবে এটির বিকাশ ঘটানো যায় তা অনুসন্ধান করে। বইটিতে অনুপ্রেরণা, অনুশীলন এবং শেখার কৌশলের মতো বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে, যা ক্যারিয়ারে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
‘দ্য লিন স্টার্টআপ’
উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ এবং শিল্পের প্রতি আগ্রহী ব্যক্তিদের এ বইটি অবশ্যই পড়া উচিত। কোনো একটি ধারনা কীভাবে পরীক্ষা এবং যাচাই করতে হয়, একটি ন্যূনতম কার্যকর পণ্য তৈরি ও গ্রাহকের প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে কীভাবে পুনরায় কাজ করতে হবে ইত্যাদি শেখা যাবে বইটি পড়লে। দ্য লিন স্টার্টআপ শুধু অধিক সফল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার বিষয়েই নয়, দৃশ্যত সব কাজে উন্নতি করতে হলে সেই ব্যবসা থেকে যা শিখতে পারি সেই বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
‘মাইন্ডসেট: দ্য নিউ সাইকোলজি অব সাকসেস’
ক্যারল এস ডুয়েক এই বইটিতে মানসিকতার শক্তি খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। কীভাবে এটি ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে তা দেখিয়েছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মানসিকতার বিকাশ কীভাবে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এবং ব্যর্থতাকে শেখার সুযোগ হিসেবে দেখে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
‘দ্য সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি এফেক্টিভ পিপল’
অভ্যাস হলো এমন কিছু কাজ যা আমরা অবচেতন মনে সবসময় করি। তবে আমরা প্রত্যেকেই নিজের অজান্তে যা কিছু করি তা অন্যদের কাছে ইতিবাচক নাও হতে পারে। এরপরেও অভ্যাসই আমাদের ব্যক্তিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। আর এর প্রভাব এসে পড়ে আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা সামাজিক জীবনে। তাই নিজের মাঝে এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত, যা অন্যদের কাছে নিজেকে আদর্শ হিসেবে প্রকাশ করে।
স্টিফেন আর কোভির লেখা ‘দ্য সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি ইফেক্টিভ পিপল’ বইটিতে ব্যক্তিগত এবং পেশাদার সাফল্যের পথে সহায়ক মৌলিক অভ্যাসগুলো নিয়ে আলোচনা রয়েছে। এর মাধ্যমে কীভাবে কাজের অগ্রাধিকার দিতে হয়, কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে হয় এবং সক্রিয় মানসিকতা তৈরি করতে হয় তা জানতে পারবেন।
‘দ্য আর্ট অব থিঙ্কিং ক্লিয়ারলি’
ভাবনা হলো মানুষের মনের দর্পণ। কাজ হলো ভাবনার প্রকাশ। কাজের ধরন অনুযায়ী মানুষ সুখ বা দুঃখ পেয়ে থাকে। ভাবনা যেহেতু মানুষের একটি স্বাধীন ব্যক্তিগত বিষয়, তাই ইচ্ছে করলেই ভাবনার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। তবে সবাই এ কাজে পারদর্শী নয়। এই বইটিতে রল্ফ ডোবেলি ক্যারিয়ারে বাধা সৃষ্টি করে এমন সাধারণ জ্ঞান সম্বন্ধীয় পক্ষপাত শনাক্ত করা এবং সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য সহায়ক পথ নিয়ে আলোচনা করেছেন। জটিল চিন্তন দক্ষতা উন্নত করে কীভাবে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় সে বিষয়ে ব্যবহারিক কৌশল এবং উদাহরণ রয়েছে বইটিতে।
‘দ্য ক্যারিশমা মিথ’
অলিভিয়া ফক্স ক্যাবেন এ বইটিতে কীভাবে ক্যারিশমা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ করতে হয় তা দেখিয়েছেন। বইটি শারীরিক অঙ্গভঙ্গি, যোগাযোগ এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয় উপস্থাপন করে এবং কীভাবে প্রভাবিত করা যায় এবং প্রভাব বাড়ানো যায় তা নিয়ে ব্যবহারিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করে।
কিউএনবি/আয়শা/০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৫:০৮