শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৪ অপরাহ্ন

যে প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের শেয়ারে ধস, দুদিনে ক্ষতি ৫ হাজার কোটি ডলার

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১১৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা। বিভিন্ন সময় নানা ধরনের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় সংস্থাটি। সম্প্রতি সংস্থাটির প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের পর রীতিমতো ধস নেমেছে ভারতের আদানি গ্রুপের শেয়ার ও গৌতম আদানির মোট সম্পদে। এতে দুই দিনে ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার মূল্যের বাজার মূলধন খুইয়েছেন ভারতীয় এই ধনকুবের।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ২৭ জানুয়ারি মধ্যে ভারতের আদানি এন্টারপ্রাইজের প্রায় ২০ শতাংশ শেয়ারের পতন ঘটে। প্রতিবেদনটি কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর মধ্যেও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আদানি গ্রুপে সাতটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি। তবে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বুধবার থেকে সম্মিলিত ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার মূল্যের বাজার মূলধন খুইয়েছেন গৌতম আদানি।

হিন্ডেনবার্গ তাদের প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, কর স্বর্গ (ট্যাক্স হ্যাভেন) ব্যবহারের পাশাপাশি শেয়ারের দাম বাড়াতে নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে আদানির কোম্পানি। বাজারে শেয়ারের দামের মূল্যায়ন বেশি করে দেখানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কোম্পানিতে প্রমোটর বা মালিকের কারসাজির ফলেই স্টকের দাম বাজারে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। আদানিরা অন্য লোকের ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর শেয়ার কিনে নিজের শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে, যা এককথায় বিনিয়োগকারীদের চোখে ধুলো দেয়ারই নামান্তর। এ ধরনের জালিয়াতির তালিকায় নাম রয়েছে আদানির পাঁচ কোম্পানির।  

বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কমপক্ষে দু’জন ব্যক্তি গণমাধ্যমকে বলেছেন, আদানি গ্রুপ শেয়ারের দামের পতনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কিন্তু ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা শেয়ার বিক্রয়ের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে।

এদিকে ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকরা হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনটি পড়ে দেখছে। তারা মূলত আদানি গ্রুপের অফশোর ফান্ড হোল্ডিংয়ের বিষয়টি ঘিরে তদন্ত চালাচ্ছেন। তাই হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনটি তাদের চলমান তদন্তে সহায়তা করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে বলেও জানায় অন্য দুটি সূত্র। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিংবা আদানির মুখপাত্রদের মধ্যে কেউ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি।  

ফোর্বস অনুসারে, ৯ হাজার ৭৬০ কোটি ডলারের মালিক গৌতম আদানি এখন বিশ্বের সপ্তম ধনী ব্যক্তি। হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তার অবস্থান ছিল তৃতীয়। হঠাৎ করে শেয়ারবাজারে মূলধন হারিয়ে তিনি এ অবস্থান থেকে ছিটকে পড়েছেন।

আদানি গ্রুপ অবশ্য হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলছে নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা বিবেচনা করা হচ্ছে। যদিও তারা ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকদের পদক্ষেপের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

২৭ জানুয়ারি থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজের সেকেন্ডারি শেয়ার বিক্রির ওপরও বড় ধরনের প্রভাব পড়তে দেখা যায়। এ সম্পর্কে গ্লোবাল সিকিউরিটিজের রিসার্চের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট সৌরভ জৈন বলেন, “পরিস্থিতিটি চরম গুরুতর, যা বাজারে সামগ্রিক বিনিয়োগকারীর মনোভাবকে স্পষ্টভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ”

ভারতের যে ব্যাংকগুলোয় আদানি গ্রুপের বড় ধরনের ঋণ রয়েছে, তাদের মধ্যেও এক ধরনের উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যাংকিং স্টক নিফটি ব্যাংক সূচকের পতন হয়েছে ৩ শতাংশের বেশি।

এদিকে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে আদানি ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তবে বৈঠকে তাদের মধ্যে কী নিয়ে আলাপ হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ধনকুবের গৌতম আদানি গুজরাটের বাসিন্দা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্যও গুজরাট। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস প্রায়ই আদানি ও অন্য ধনীদের বিরুদ্ধে মোদি সরকারের কাছ থেকে ব্যবসায়িক নীতিগত সুবিধা পাওয়ার বিষয় নিয়ে অভিযোগ করে আসছে।  

সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৮ জানুয়ারী ২০২৩/দুপুর ২:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit