বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২৯ অপরাহ্ন

ঝালকাঠির ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা ব্রিজটি জনসাধারণের জন্য মরণ ফাঁদ!

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৯৮ Time View

গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি : ঝালকাঠি খুলনা মহা-সড়কের বাসন্ডা নদীর উপরে একযুগধরে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা সেই বেইলী ব্রিজটি এখন ভয়ংকর মরণ ফাঁদ হলেও সড়ক ও জলপথ বিভাগের কাছে ব্রিজটি যেন সোনার ডিম পাড়া হাঁস। ১২০ মিটারের ব্রিজটি উপরে রয়েছে প্রায় এক হাজার জোড়াতালি। সেতুটির ওপরের স্টিলের প্লেটেই প্রায় ছয়শত জোড়াতালি দেয়া হয়েছে।প্রায় একযুগ পূর্বে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও নতুন সেতু নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও সেতু বিভাগ। বরং প্রতিবছর সেতু সংস্কারের নামে কাগজ কলমে অফিস কর্তিপক্ষ ব্যয় দেখায় বিপুল পরিমাণ অর্থ। গত শেষ পাঁচ বছরেই সেতুটি সংস্কারে ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তব চিত্রে ব্রিজটি বছরে কয়েকজন লেবার দিয়ে আধাবেলা জোড়াতালি ও জ্বালাই করে মাত্র কয়েক হাজার টাকা ব্যয়করে,সংস্কারের নামে বরাদ্দ অর্থের সিংহভাগই যাচ্ছে অফিস কর্তিপক্ষের পকেটে।

বরিশাল-খুলনা মহা সড়কের ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীর ওপর আশির দশকে নির্মাণ করা হয়েছিল ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ বেইলি ব্রিজটি। বর্তমানে ব্রিজটি ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।প্রায় এক যুগ আগে ব্রিজটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তারপরও প্রতিদিন এর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ভারীসহ বিভিন্ন যাত্রী ও মালবাহী যানবাহন।ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও নতুন ব্রিজটি নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও সেতু বিভাগ, বরং প্রতিবছর সেতু সংস্কারে ব্যয় করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শেষ পাঁচ বছরেই সেতুটি সংস্কারের নামে ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।ঝালকাঠির সচেতন মহল ব্রিজটি নাম দিয়েছেন ‘সড়ক বিভাগের ডিম পাড়া হাঁস’। তাদের দাবি, এটি যতবার মেরামত করা হয় ততবারই লাভবান হয় ঝালকাঠি সড়ক বিভাগ। টেন্ডার ছাড়া নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বছরে তিনবার সেতুটি মেরামত করেন ঝালকাঠি সড়ক বিভাগ। প্রতিবার মেরামতে খরচ দেখানো হয় ৬ লক্ষাধিক টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের এক নির্ভরযোগ্য কর্মকর্তার দেয়া হিসাব অনুযায়ী, সেতুটির দুই তিনটি স্টিলের প্লেট পরিবর্তন ও ঝালাইয়ের কাজে গত পাঁচ বছরে তাদের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা।অন্যদিকে এ ব্রিজটির আধা কিলো মিটার পরেই রয়েছে গাবখান ব্রিজ অনুসন্ধানে গাবখান টোলপ্লাজা থেকে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে। বারবার মেরামত করা হলেও সেতুটি কয়েক দিনের মধ্যেই ফের যান চলাচলের মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। নাট-বল্টু খুলে পড়ার পাশাপাশি ফেটে যাচ্ছে প্লেট। প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটেই যাচেছ। তারপরও বিকল্প পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। যেকোন মূহুর্তে ঘটতে পারে ভয়ংকর দুর্ঘটনা।ব্রিজটি ভেঙে পড়লে ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।সেতু এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতে সেতুতে ভারী গাড়ি উঠলে প্লেটের বিকট শব্দে ঘুমন্ত শিশুরা কেঁপে ওঠে। শব্দ থামানোর জন্য মাঝে মাঝে প্লেটের জয়েন্টগুলো কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে ঝালাই করলেও ব্রিজটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। গাড়ি নিয়ে ভেঙে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি হবে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল আহম্মেদের সাথে মেরামত ব্যয়ের বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য দিতে রাজি হননি। তাদের বিরুদ্ধে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা বেইলি ব্রিজটি দায়সারা সংস্কার ও বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ব্রিজটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করার জন্য ডিজাইন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি বাস্তবায়ন হলে শিগগিরই এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

কিউএনবি/অনিমা/২৬ জানুয়ারী ২০২৩/সকাল ১০:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit