শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

গ্যাস সংকট চরমে, জ্বলছে না চুলা

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চরম গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় গ্যাসের সংকট এতোটাই প্রকপ আকার ধারণ করেছে যে, চুলাই জ্বলছে না। অল্প আঁচের এ যন্ত্রণা বেশ কিছুদিন ধরেই ভোগাচ্ছে গ্রাহকদের। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাসের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে অধিকাংশ এলাকাতেই। গভীর রাতে গ্যাস আসলে তবেই সারতে হচ্ছে রান্না-বান্না। বিকল্প হিসেবে কেউ কেউ এলপিজি সিলিন্ডার দিয়েই কাজ সারছেন।

তিতাস সূত্র জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার আশেপাশের এলাকা সাভার, গাজীপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ,  মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ থাকছে না। ফলে উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে এসব এলাকার শিল্প কারখানাগুলোর।

শীত আসলেই গ্যাসের এই সংকট বেশি দেখা যায়। সাধারণত দুই কারণে এমন সংকট হয়। এর একটি হচ্ছে—তাপমাত্রা কমে গেলে চাহিদার অতিরিক্ত গ্যাস প্রয়োজন হয়। সেটির সংস্থান না করতে পারলে সংকট শুরু হয়। 

অন্যদিকে, গ্যাস বা মিথেন হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং কার্বনের বন্ড। শীত এলে পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে সরবরাহ করা তা কঠিন হয়ে পড়ে। একারণে পাইপলাইনের একেবারে শেষ প্রান্তের মানুষ গ্যাস কম পায়। এমনকি লাইনের আগেরও অনেকে গ্যাস কম পায়।

জানা গেছে, দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, এর বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ২৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। দৈনিক প্রায় এক হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কম করা হচ্ছে।

আরও জানা গেছে, এখন গড়ে ৪২১ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। আর বাদবাকি অংশ দেশীয় খনির গ্যাস।

তিতাসের একজন কর্মকর্তা জানান, এলএনজি আমদানি না করা পর্যন্ত এই সংকট কাটিয়ে ওঠা কঠিন।

ঢাকার বড় মগবাজারের বাসিন্দা আয়শা সিদ্দিকা পলি। অভিযোগ করে তিনি বলেন, “সকালেই গ্যাস চলে যায়, আসে রাত দশটার পর। লাইনের গ্যাস থেকে রান্না করতে চাইলে গভীর রাতে করতে হয়।” তাই আপাতত এলপিজি সিলিন্ডার দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি। এর ফলে সিলিন্ডার কেনার খরচ যেমন বেড়েছে তেমনি মাসশেষে গ্যাস বিলও দিতে হচ্ছে।

একই অভিযোগ মালিবাগের কামাল হোসেনেরও। তিনি বলেন, “হোটেলের দোকান চালাই। আগে লাইনের গ্যাসের চুলায় রান্না করতাম। এখন সকালেই গ্যাস চলে যায়, আসে রাত দশটায়। সিলিন্ডার দিয়েই রান্না করতে হচ্ছে, ফলে খরচ বেড়ে গেছে।”

একই ধরনের অভিযোগ খিলগাঁও, বাসাবো, মানিকনগর, পুরানো ঢাকার বেশকিছু এলাকা, রামপুরার উলন, ওয়াপদা, মধুবাগসহ আরও কয়েক এলাকার বাসিন্দাদের।

গ্যাস সংকট কবে স্বাভাবিক হবে এবিষয়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট কাটানো কঠিন। সরকার গত বছরের শেষ প্রান্তে এসে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। স্পট মার্কেট থেকে যতদিন এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হবে না ততদিন এই সংকট কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

তিতাসের পরিচালক (অপারেশন) মো. সেলিম মিয়া বলেন, “আমাদের প্রায় ১৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ১৫০০ মিলিয়নের মতো আমরা পাচ্ছি। প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আছে আমাদের। এছাড়া শীতের কারণে গ্যাস জমে যাওয়ায় পাইপলাইনের একেবারে শেষ প্রান্তের গ্রাহকের গ্যাসের সরবরাহ কম থাকে প্রায়ই।”

তবে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিউএনবি/অনিমা/১২ জানুয়ারী ২০২৩/দুপুর ১:২৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit