বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীদের কর্মবিরতি আরো তিনদিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা কর্মসূচি পালন করেছেন। এদিকে কর্মবিরতির মধ্যেই আদালতে মামলা জমা দেওয়া আইনজীবী কামরুল ইসলামকে বহিস্কার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে হওয়া এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিকেলে সমিতির সভাপতি তানবীর ভ‚ঞা ও সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান সাংবাদিকদেরকে এ বিষয়ে ব্র্রিফ করেন। এ সময় তারা ঘটনা সুরাহার জন্য আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলতে থাকায় আদালতে অচলাবস্থা বিরাজমান। তবে সেবা গ্রহীতাদের কথা চিন্তা করে এরই মধ্যে বিচার বিভাগীয় কর্মচারি অ্যাসোসিয়েশন তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে তিনদিনের কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেন। কবে নাগাদ এ অচলাবস্থার অবসান হবে এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকের অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। একই সঙ্গে তারা দু’জন বিচারক ও একজন নাজিরের প্রত্যাহার দাবি করেন। বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৩ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারিরা।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের এজলাসের সামনে আসেন অ্যাডভোকেট আক্কাস আলী। সমিতির সিদ্ধান্ত অনুসারে বিচারককে এজলাসে না বসতে বলেন এ সময় বিচারককে জানানো হয় যে তার আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিচারক জানান তিনি এজলাসে না বসার বিষয়ে আইনজীবীরা বলতে পারেন না। আদালত বর্জন করলে আইনজীবীরা না আসতে পারে। বিচারকের এ কথার সময়ই আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানবীর ভ‚ঞা ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে থাকেন, ‘এখান থেকে নাম তুই।’ ওনিসহ কয়েকজন আইনজীবীকে একাধিকবার কথাটি বলতে শুনা যায়। ভিডিওর ঘটনাটি ২ জানুয়ারি বলে একাধিক সূত্র জানায়।
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ জেলা আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। এ ঘটনায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। ওই তিন আইনজীবী হলেন, সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) মো. আক্কাস আলী ও জুবায়ের ইসলাম। ঘটনা তুলে ধরে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে গত ২ জানুয়ারি সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে চিঠি পাঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক।
আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরাও চাই বিচার প্রার্থীরা যেন সেবা পান। এ বিষয়ে আমরা আইনমন্ত্রী ও আইন সচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করি। একই সঙ্গে দুই বিচারক ও নাজিরের প্রত্যাহার দাবি করছি।’ আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানবীর ভ‚ঞা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর কাছে গেলে হয়তো তিনি বলে দিতেন বিষয়টি দেখবেন। যে কারণে আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৯ জানুয়ারী ২০২৩/রাত ১১:১৪