ডেস্ক নিউজ : বাকশক্তি মহান আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত। আমাদের উচিত, আল্লাহপ্রদত্ত এই অমূল্য নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। এবং তা অনর্থক কথায় ব্যবহার না করা। কারণ মহান আল্লাহ আমাদের প্রতিটি কাজই পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতি মুহূর্তে আমাদের কথোপকথনগুলো নজরদারি করার জন্য তাঁর বিশেষ ফেরেশতা রয়েছে। এ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে (তা সংরক্ষণের জন্য) তার কাছে একজন সদা তৎপর প্রহরী আছে। ’ (সুরা ক্বাফ, আয়াত : ১৮)
তাই আমাদের উচিত, কথাবার্তায় সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া, জিহ্বাকে সংযত রাখা। কারণ নবীজি (সা.) এই অঙ্গটিকে সর্বাধিক আশঙ্কাজনক অঙ্গ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস-সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমাকে এমন একটি কথা বলুন, যা আমি ধারণ করতে পারি। তিনি বলেন, তুমি বলো, আল্লাহই আমার রব (প্রভু) তারপর এতে সুদৃঢ় থাকো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আবার বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনার দৃষ্টিতে আমার জন্য সর্বাধিক আশঙ্কাজনক বস্তু কোনটি? তিনি স্বীয় জিহ্বা ধরে বলেন, এই যে এটি। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১০)
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুজানি (রা.) নামক রাসুল (সা.)-এর সাহাবি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি: তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার এ কথার কারণে তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য স্বীয় সন্তুষ্টি লিখে দেন। আবার তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে চিন্তাও করে না যে তা কোন পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে। অথচ এ কথার কারণে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৯)
তাই কথা বলার ক্ষেত্রে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, এমন কথা বলা উচিত। অন্যথায় চুপ থাকা উচিত। মহানবী (সা.) অনর্থক কথা পরিহারকে ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য বলে আখ্যা দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৮) আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, কথা হলো ওষুধের মতো, তা কম (পরিমিত) হলে তা উপকারী, আর বেশি হলে জীবননাশক। (আল এজাজ ওয়াল ইজাজ, পৃ: ৭৪)
এ জন্যই হয়তো নবীজি (সা.) জিহ্বা সংযত রাখাকে মুক্তির উপায় বলেছেন। উকবা ইবনে আমির (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), মুক্তির উপায় কী? তিনি বলেন, তুমি তোমার জিহ্বা সংযত রাখো, তোমার বাসস্থান যেন তোমার জন্য প্রশস্ত হয় (অর্থাৎ তুমি তোমার বাড়িতে অবস্থান করো) এবং তোমার গুনাহের জন্য ক্রন্দন করো। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৬) অতএব আমাদের সবার উচিত, সব ধরনের অনর্থক কথা ও কাজ বর্জন করা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনোনিবেশ করা।
কিউএনবি/আয়শা/১৫ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৪০