খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : লঞ্চে বা পিক-আপ ভ্যানে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা নদী পারাপর হচ্ছে মোটর সাইকেল। এতে হয়রানি ও অর্থ ব্যয় বেড়ে গেছে বহুগুন। পদ্মা সেতুতে মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি চাইছেন মোটর সাইকেল আরোহীরা। পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ায় মাওয়া-কাঠালবাড়ি-মাঝিকান্দি নৌ-পথে ফেরি ও লঞ্চ পারাপার সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রথম দিনেই পদ্মা সেতুতে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় দুই জন আরোহীর মৃত্যু হয়। তখন থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে মোটর সাইকেল আরোহীরা বিপাকে পড়ে যায়।
জরুরী প্রয়োজনে মোটর সাইকেল আরোহীরা ট্রলার ও পিক-আপ ভ্যানে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে মোটর সাইকেল নিয়ে পদ্মা নদী পাড় হতে শুরু করে। সেই থেকে সাড়ে ৩ মাস পার হয়ে গেলেও এখনও পদ্মা সেতু দিয়ে মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি মিলেনি। এখনও পদ্মা নদী পারাপারে বহুগুন টাকা গুনতে হচ্ছে মোটর সাইকেল আরোহীদের। পদ্মা সেতুর নাওডোবা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, কেউ মোটর সাইকেল নিয়ে থামলেই কয়েকজন লোক এসে জানতে চায় পিক-আপ ভ্যানে মোটর সাইকেল পার হওয়ার সুযোগ আছে। এশটি মোটর সাইকেল ও ১ জন আরোহীর জন্য ১২০০ টাকা লাগবে। কেউ দামাদামি করে টাকার পরিমান কিছুটা কমাতে পারে।
তবে ৮০০ টাকার কমে আর সম্ভব না। যাত্রিদের হয়রানী কমাতে মাঝিকান্দি-মাওয়া নৌ-পথে ১ মাস ধরে লঞ্চ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। তারাও মোটর সাইকেল প্রতি ৪০০ টাকা নিয়ে পারাপার করেন। সকাল সারে ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টা অন্তর লঞ্চ ছাড়ে। এমনি ভাবে মোটর সাইকেল আরোহীদের পারাপার হতে হয়। মোটর সাইকেল নিয়ে লঞ্চে মাঝিকান্দি পার হয়ে কুয়াকাটা অভিমুখি সাইফ আহমেদ ও কুষ্টিয়া অভিমুখি প্রকৌশলী মিজান বলেন, সকাল ৮টায় পুরান ঢাকা থেকে রওয়ানা করে দুপুর দেড়টায় কেবল পদ্মা নদী পাড় হয়েছেন। সেতু দিয়ে পাড় হতে পাড়লে ২ ঘন্টা পূর্বে তারা গন্তব্যে পৌঁছতে পারতেন। প্রথমে তারা মোটর সাইকেল নিয়ে সেতুর উত্তর প্রান্তে যায়।
মোটর সাইকেল পিক-আপ ভ্যানে পার করতে প্রত্যেকের কাছে ১২০০ টাকা দাবী করে। পরে তারা ৪০০ টাকার বিনিময়ে লঞ্চে পদ্মা নদী পার হয়েছেন। তারা সেতু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘মোটর সাইকেল থেকে এক দিনে যে টোল আদায় হয় তা দিয়ে পদ্মা সেতুতে স্পীডগান ও ক্যামেরা স্থাপন করা সম্ভব। আমরাও দেশের নাগরিক। আমাদের হয়রানি ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব পদ্মা সেতু দিয়ে মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়ে আমাদের হয়রানী মুক্ত করবেন। নয়তো পুনরায় ফেরি সার্ভিস চুলু করে দেন’।
লঞ্চ ঘাটের সুপার ভাইজার ইমরান শেখ বলেন, মোটর সাইকেল আরোহীদের কথা বিবেচনা করে ১ মাস ৬দিন ধরে লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়েছে। প্রতিদিন দেড় ঘন্টা অন্তর লঞ্চ ছাড়ে। এই পর্যন্ত লঞ্চ মালিকদের ৩ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। মোটর সাইকেল ছাড়া যাত্রি তেমন হয় না। যে লঞ্চটি ছেড়ে গেছে তাতে একটি মোটর সাইকেল ও ২০ জন যাত্রি ছিল। এই ভাবে আমাদের পোষায় না। যদি যাত্রি বাড়ে তাহলে সার্ভিস চালু রাখা হবে। নয়তো বন্ধ করে দেয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৫ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৪৪