খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যানের আমন্ত্রনে এসে আওয়ামীলীগের অপর পক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডামুড্যা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মাস্টার কামাল উদ্দিন। এসময় আব্দুল আউয়াল শামীমের সফর সঙ্গী শরীয়তপুর জেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি সজল সিকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মাস্টার কামাল উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই মনির মাঝি সহ অন্তত ৫ জন আহত হয়। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের চেয়ার টেবিল ও দুটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। পরে আওয়ামালীগ নেতা শামীম পুলিশের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ডামুড্যা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানগেছে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম ও তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা সোমবার দুপুরে জেলার গোসাইরহাট উপজেলায় কয়েকটি পূজামন্ডপ পরিদর্শন করে। এর পর ডামুড্যা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের আমন্ত্রনে রাতের খাবার শেষে চেয়ারম্যানের কক্ষে বসেছিলেন। হঠাৎ রাত সাড়ে ৮টার দিকে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের অনুসারী ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগরে তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর, ডামুড্যা পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু ও পূর্ব মাদারীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক সানোয়ার হোসেন মিঠুসহ ২০ থেকে ২৫ জন লোক হামলা করে। এ সময় হামলা কারীরা অফিসের চেয়ার-টেবিল ও বাহিরে থাকা ২টি প্রাইভেটকার ভাংচুর করে।
এ ব্যাপারে ডামুড্যা পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগরে তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক জুলহাস মাদবর বা আমার নেতৃত্বে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি, এটা মিথ্যা এবং বানোয়াট। তবে উপজেলা পরিষদের সরকারী ভবনে বসে রাতে আমাদের এমপি সাহেবের বিরুদ্ধে শ্লোগন দেয়ায় উত্তেজিত কিছু ছেলেরা এ ঘটনা ঘটাতে পারে। ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাষ্টার কামাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল আউয়াল শামীমসহ আমরা অন্তত ৩০/৩৫ জন লোক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কক্ষে বসে কথা বলছিলাম। হঠাৎ ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগরে তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবরসহ ২০/২৫ জন লোক লাঠিসোটা নিয়ে রুমেই আমাদের উপর হামলা করে।
ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি বলেন, আব্দুল আউয়াল শামীম সোমবার দুপুরে আমার পরিষদে আসার কথা ছিল। আমি তাদের জন্য খাবারের আয়োজন করি। কিন্তু সে আসে রাতে। খাওয়া দাওয়ার শেষ পর্যায়ে ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগরে তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক জুলহাস মাদবর, ডামুড্যা পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু ও পূর্ব মাদারীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক সানোয়ার হোসেন মিঠুসহ ২০ থেকে ২৫ জন লোক হামলা করে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ী ফিরেন শামীম ভাই। হামলাকারীরা সবাই আমাদের এমপি নাহিম রাজ্জাক সাহেবের লোকজন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম বলেন, আমি গতকাল সোমবার দুপুরে গোসাইরহাট পূজামন্ডপ গুলো পরিদর্শন করেছিলাম। হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলেছি। ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আমন্ত্রনে খাওয়া দাওয়া করার জন্য আমি ও আমার সাথে থাকা নেতাকর্মীদের নিয়ে তার অফিসে এসেছিলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ করে আমাদের উপর একদল যুবক হামলা করে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় চলে আসি। হামলাকারীদের চিহ্নত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি এবং আব্দুল আউয়াল শামিম সাহেবসহ তার সফর সঙ্গীদের নিরাপত্তা দিয়ে ডামুড্যা এলাকা পাড় করে দেই। তবে এই ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের সাথে তার মুঠোফোন ০১৬৭৮০৭৬৫০১ও ০১৭১৫০৪০৯৮৩ নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:০০