রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ন

দুর্গোৎসব শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে কোথাও টানা ৯৯ বছর, কোথাও প্রথমবারের পূজা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২
  • ২২৮ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : স্বর্গীয় হরিধন সাহার বাড়িতে দুর্গোৎসবের বয়স ৯৯ বছর। ঘট পূজা দিয়ে শুরু করে এখন বাড়িটিতে প্রতিবছরই প্রতিমায় দুর্গাপূজা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ পরিবারের সদস্যরা ভারতের ত্রিপুরায় শরনার্থী থাকা অবস্থায় সেখানেও নিয়ম রক্ষার পূজা করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ বছরই প্রথম পূজা হচ্ছে গ্রামটিতে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ওই গ্রামে দুর্গাপূজা হলেও নানা কারণে ছেদ পড়ে। দু’বছর আগে ওই গ্রামে মন্দিরের প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা উদ্ধার হলে এলাকাবাসীর মনে আশার সঞ্চার হয়। সে কারণেই এবার তারা পূজার আয়োজন করেছেন।

হারাধান সাহার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে। রুটি গ্রামটি জেলার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নে। ঐতিহ্যগতভাবে পূজা করতে পেরে বেজায় খুশি হারাধন সাহার পবিরারের লোকজন। গ্রামে প্রথমবারের মতো পূজা দেখতে পেয়ে বেশ উৎফুল্ল রুটি গ্রামের হিন্দু ধর্মালম্বী সমাজ। শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবারও শুরু হয়েছে হিন্দুধর্মালম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। জেলার ছয় শতাধিক মন্দিরে শনিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। সবেচেয়ে বেশি ১৫১টি মন্ডপে পূজা হচ্ছে নাসিরনগর উপজেলায়। এছাড়া নবীনগরে ১২৯, সদরে ৭৮, বিজয়নগরে ৬৫, সরাইলে ৪৯, কসবায় ৪৯, বাঞ্ছারামপুরে ৪৭, আখাউড়ায় ২২ ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ১৪টি মন্ডপে পূজা হচ্ছে। এবার ৪০টির বেশি পূজা বেড়েছে। 

এবারের পুজায় ব্যতিক্রম আয়োজন রয়েছে জেলার আখাউড়া উপজেলার শ্রী শ্রী রাধামাধব আখড়া কেন্দ্রীয় মন্দিরে। পূজার নবমীর দিন বিকেলে জীবিত মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হবে মন্দিরটিতে। সোমবার অষ্টমীর দিন সকালে রাধামাধব আখড়া, মোগড়া দশভ‚জা মন্দির ও মনিয়ন্দের রামসুন্দর মন্দিরে আসবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গত বছর দেশের বিভিন্নস্থানে হামলার ঘটনাকে আমলে নিয়ে এ বছর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্দির ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরেই স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। নিয়মিত আনসার সদস্যদের অবস্থানের পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। 

শাহবাজপুর গ্রামের হরিধন সাহার ছেলে বলাই সাহা বলেন, ‘আমার প্রয়াত বাবার বয়স যখন ১৬ বছর তখন থেকেই তিনি আমাদের বাড়িতে ঘটের মাধ্যমে দুর্গাপূজার শুরু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের পরিবারের সবাই ত্রিপুরায় শরনার্থী শিবিরে থাকা অবস্থায় সেখানেই নিয়ম রক্ষা করা হয়। দেশ স্বাধীনের পর থেকে প্রতিমা দিয়ে পূজার শুরু করা হয়। দিনকে দিন পূজাকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজন ও আনন্দ বেড়ে চলছে।’আখাউড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আমাদের উপজেলার এবার রুটি গ্রাম ও পৌরসভার মসজিদ পাড়া এলাকায় প্রথমবারের মতো পুজা হচ্ছে। এর মধ্যে রুটি গ্রামে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তক্ষেপে ও পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফার সহযোগিতায় দু’বছর আগে মন্দিরের জায়গা উদ্ধার করা হয়।

এরপর থেকেই ওই এলাকার হিন্দুধর্মালম্বীরা দুর্গাপূজা করার জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেন। স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন।’বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি সোমেশ রঞ্জন রায় বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এলাকা। পূজাকে কেন্দ্র করে এখানে কোনো সহিংস ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছরও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’    

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০২ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit