সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

যেভাবে হাঁটতেন মহানবী (সা.)

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৪২ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল অনন্য। যা কলমে লিখে বা মুখে বলে শেষ করা যাবে না। নবীজি (সা.)-এর স্বভাবসম্মত প্রতিটি গুণ আমাদের জন্য অনুসরণীয়। রাসুল (সা.) হাঁটতেন একজন শক্তিশালী পূর্ণোদ্যম পুরুষের মতো।

এই কারণে হাঁটার গতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে একটু দ্রুত। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) হাঁটার সময় একটু ঝুঁকে হাঁটতেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩০)  লাকিত বিন সাবুরা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি একবার রাসুল (সা.)-কে খুঁজতে আয়েশা (রা.)-এর কাছে এলেন। সেখানে তাঁকে পেলেন না। এরই মধ্যে রাসুল (সা.) সেখানে উপস্থিত হলেন, পৌরুষভরে একটু ঝুঁকে হেঁটে হেঁটে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৩) আলী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) হাঁটার সময় একুটু ঝুঁকে হাঁটতেন। যেন কোনো উঁচু ভূমি থেকে অবতরণ করছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬৩৭) আবু তোফাইল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) যখন হাঁটতেন মনে হতো উঁচু ভূমি থেকে অবতরণ করছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৬৪)                                                                           

উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষণীয়—     

১. হাঁটার সময় তিনি শক্তি ও উদ্যম রেখে সজোরে হাঁটতেন। মনে হয় যেন উঁচু ভূমি থেকে নিচে নামছেন।

২. হাঁটার সময় গতিশীল ও ঊর্ধ্বগামী হাঁটতেন। হাঁটার এ ধরন তাঁর পৌরষেরও প্রকাশ।

৩. হাঁটার সময় তিনি মাটি থেকে পরিপূর্ণভাবে পা ওঠাতেন তারপর পা ফেলতেন। পা মাটিতে ছেঁচড়ে চলতেন না।  

 রাসুল (সা.)-এর চলার এ পদ্ধতি—মধ্যম ধরনের। একেবারে শরীরের সব শক্তি ছেড়ে প্রাণহীন হয়ে অথবা উদভ্রান্তের মতো অস্থির হাঁটা—কোনোটাই নয়। চলার ক্ষেত্রে বীরত্বভাব ও গতিশীল থাকার অর্থ এই নয়; অহংকার ও দম্ভিকতা প্রকাশ পাওয়া। চলার এ নববী তরিকায়, গভীরভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে বিনয়ভাব সুস্পষ্ট ফুটে উঠছে। আল্লাহ তাঁর পছন্দনীয় বান্দাদের হাঁটা-চলার বৈশিষ্ট্যের কথা এভাবে বর্ণনা করেছেন। কোরআনের ভাষায়—‘রাহমান-এর বান্দা তারা, যারা ভূমিতে নম্রভাবে চলাফেরা করে। ’ (সুরা ফুরকান : ৬৩)                                                                            

রাসুল (সা.) যখন হাঁটতেন তখন মনে হতো উঁচু ভূমি থেকে অবতরণ করছেন, জমিন তাঁর সামনে সংকোচিত হয়ে আসছে। অনেকে রাসুল (সা.)-এর সিরাত না জানার কারণে জমিনে অপরাধী ও দুর্বলদের মতো হাঁটাকে পছন্দ করে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। পূর্ববর্তী মুসলিম মনীষীরা দুর্বল মানুষের মতো হাঁটা পছন্দ করতেন না। উমর (রা.) একজন যুবককে ধীরগতিতে হাঁটতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন—কী ব্যাপার! তুমি কি অসুস্থ? সে জবাব দিল, না হে আমিরুল মুমিনিন! উমর (রা.) তাকে চাবুক দিয়ে তাড়া করলেন এবং দৃঢ়পদে হাঁটার নির্দেশ দিলেন। ইবনুল কাইয়ুম (রহ.) ‘জাদুল মাআদ’ নামক কিতাবে হাঁটার ১০টি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। এরপর বলেছেন, সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ হাঁটা হলো নম্রভাাবে ঈষৎ ঝুঁকে ঝুঁকে হাঁটা। অর্থাৎ হাঁটাচলায় নববী পন্থা অবলম্বন করা। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ! ফাতেমার হাঁটার নিগূঢ়তা রাসুল (সা.)-এর হাঁটার ধরন থেকে বেশি দূরবর্তী নয়। (বুখারি, হাদিস : ৬২৮৬)

যারা ফাতেমা (রা.)-এর হাঁটার ধরন জানে তারা রাসুল (সা.)-এর হাঁটার ধরন সহজেই অনুমান করতে পারবে। রাসুল (সা)-এর হাঁটা শুধু স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যই নয়; বরং সুউচ্চ ব্যক্তিত্বেরও প্রকাশ।

লেখক : খতিব, মদিনা জামে মসজিদ, রায়পুরা, নরসিংদী

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২২ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সকাল ৯:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit