সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন

নারীর জন্য চাই সুষম খাবার

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৮২ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : বেশির ভাগ মহিলাই তাঁদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কোনো না কোনো গাইনোকোলজিক্যাল সমস্যায় ভোগেন। স্ত্রীরোগসংক্রান্ত সমস্যাগুলো একজন মহিলার যৌনক্রিয়া এবং সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এসব সমস্যা জীবনের হুমকি হতে পারে, সে জন্য রিপ্রডাক্টিভ বয়স বা সন্তান উৎপাদনক্ষম বয়সের শুরু থেকে প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক ও সুষম খাবার গ্রহণ করলে শরীরকে নানা রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখা যায়।

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের পুষ্টি

এ সময়ে মেয়েদের যেমন মানসিক পরিবর্তন আসে, তেমনি আসে শারীরিক পরিবর্তন।

মেয়েদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন। এ সময় কিছু নিয়ম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস মাসিক-পূর্ববর্তী বা মাসিক চলাকালীন লক্ষণ কমাতে কার্যকর। যাঁরা ফলমূল বা শাক-সবজি পর্যাপ্ত খান, তাঁদের মাসিকজনিত ব্যথা প্রশমনে এগুলো সাহায্য করে থাকে। শাক-সবজি, মাংস, কলিজা ও ছোলায় আয়রন ও ভিটামিন-বি পাওয়া যায়। এগুলো মাসিক চলাকালে শরীরের যে ঘাটতি তৈরি হয়, তা পূরণে সাহায্য করে। যাঁরা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার বা সাপ্লিমেন্ট সেবন করেন, তাঁদের মাসিকজনিত ব্যথা কমাতে সেগুলো কার্যকর। টুনা মাছ, স্যামন, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়াসিড ও বাদামে ওমেগা-৩-এ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। মাসিকের সময় মুড সুইংজনিত সমস্যা কমবেশি সবারই হয়। তাই মুড ভালো রাখতে ম্যাগনেসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখলে তা মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে। কলা ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস। লাল চাল, লাল আটা এবং শাক-সবজিতে ফাইবার পাওয়া যায়।             

গর্ভকালীন পুষ্টি

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় প্রসূতি নারীর খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, অনেক ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়া ও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। পাঁচ মাস থেকে ভ্রূণের যথাযথ বৃদ্ধির জন্য মায়ের খাবারটা হওয়া চাই সুষম। সঙ্গে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং পর্যাপ্ত পানি থাকা চাই। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। মহিলাদের গর্ভের শেষের দুই মাস তাঁদের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদার সঙ্গে অতিরিক্ত  আমিষ গ্রহণ করতে হবে। এসব আমিষ উত্কৃষ্ট অর্থাৎ প্রাণিজ হওয়া বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি খাবারে যাতে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি-এর অভাবে এ সময় ‘অস্টিওম্যালেসিয়াম’ নামের অস্থি বা হাড়ের রোগ দেখা দেয়। এ ছাড়া এ সময় আয়োডিনযুক্ত খাবার; যেমন—সামুদ্রিক মাছ গর্ভবতী মায়ের খাদ্যে থাকা উচিত। কারণ আয়োডিন শিশুর বুদ্ধি বা মস্তিষ্কের বর্ধনের জন্য জরুরি।

গর্ভ-পরবর্তী পুষ্টি

সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়ের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে বেশ কিছু সময় লাগে। মায়ের নানা ঘাটতি পূরণ করতে সচেষ্ট থাকতে হবে। উত্কৃষ্ট বুকের দুধ উৎপাদনের জন্য সুষম খাবারের কোনো বিকল্প নেই। একজন প্রসূতি নারীকে অন্য নারীদের তুলনায় বেশি খাবার দিতে হবে। কারণ নিজেকে সুস্থ করে তোলার পাশাপাশি সন্তানকেও বুকের দুধ খাওয়াতে হয়।

মায়ের বুকের দুধে কী মাত্রায় থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-বি১২, ভিটামিন-এ, আয়োডিন ও সেলেনিয়াম থাকবে, তা নির্ভর করবে মায়ের খাবারে এসব কী মাত্রায় উপস্থিত আছে তার ওপর।

থায়ামিন (উৎস : দানা শস্য, গরুর মাংস, ফুলকপি, কলিজা, ডালজাতীয় খাবার, ডিম, আলু ইত্যাদি), রিবোফ্লাভিন (উৎস : ডিম, দুধ, মাংস, দানা শস্য, বাদাম ইত্যাদি), ভিটামিন-বি৬ (উৎস : দুধ, ডিম, কলিজা, মাংস, শাক, ছোলা ইত্যাদি), ভিটামিন-বি১২ (উৎস : দুধ ও দুধজাতীয় খাবার, কলিজা, ডিম, মাংস ইত্যাদি), ভিটামিন-এ (উৎস : মিষ্টিকুমড়া, গাজর, গাঢ় সবুজ শাক-সবজি, কলিজা ইত্যাদি), আয়োডিন (আয়োডিনযুক্ত লবণ, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি) এবং সেলেনিয়াম (উৎস : ডাল, বাদাম, কলা, মাশরুম, ডিম ইত্যাদি)—এজাতীয় খাবার মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে, যেন বুকের দুধে এগুলোর ঘাটতি তৈরি না হয়।             

অন্যদিকে অন্য মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস (যেমন—ফোলেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক ও কপার) মায়ের দেহে কম পরিমাণে মজুদ থাকলেও বুকের দুধে সরবরাহ হতে থাকে। এর অর্থ হলো বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের নিজস্ব মজুদগুলো থেকে সরবরাহ হয়। এই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বেশি খাওয়া হলে মা নিজেই উপকৃত হবেন এবং দেহে ঘাটতি তৈরি হবে না। ফোলেট (গাঢ় সবুজ শাক, ডাল, আম, বাদাম, ডিম ইত্যাদি), ক্যালসিয়াম (দুধ ও দুধজাতীয় খাবার, বাদাম, চিয়াসিড ইত্যাদি), কপার (দানা শস্য, বাদাম, আলু, গোলমরিচ ইত্যাদি), জিংক (মাংস, ডাল, বাদাম, বীজজাতীয় খাবার ইত্যাদি), আয়রন (গরুর বা খাসির মাংস ও কলিজা, ডাল, ছোলা, বাদাম ইত্যাদি)—এসব খাবার প্রসূতি মাকে খেতে হবে নিজের দেহের ঘাটতি পূরণের জন্য।

লেখক : পুষ্টিবিদ

গুলশান ডায়াবেটিক কেয়ার

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১০ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:২৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit