সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন

গলায় পাড়া দিয়ে অভিনেত্রী শিমুকে হত্যা করেন স্বামী

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৩৫ Time View

বিনোদন ডেস্ক : ঘটনার দিন চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু বাসায় মোবাইল চালাচ্ছিলেন। তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল মোবাইলটি দেখতে চাইলে অস্বীকৃতি জানান শিমু। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। এর মধ্যে নোবেল গলার ওপর পা দিয়ে দাঁড়ালে শিমু নিস্তেজ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। আজ মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া মামলার অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও নোবেলের বাল্যবন্ধু এস এম ফরহাদকে অভিযুক্ত করা হয়। এ মামলার অভিযোগপত্রের বিষয়ে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চিত্রনায়িকা শিমু তার বাবা-মাসহ নোবেলদের পাশের বাসায় থাকতেন এবং অভিনয় করতেন। নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নোবেল তার বাবা-মায়ের মতের বিরুদ্ধে শিমুকে বিয়ে করেছিলেন। প্রথম প্রথম নোবেলের বাবা-মা তাদের সঙ্গে থাকলেও পরে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য হয়। এরপর নোবেলের বাবা-মা আলাদাভাবে বসবাস করতে থাকেন এবং নোবেল গ্রীনরোডে স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস শুরু করেন। বিয়ের পর শিমুকে সিনেমায় অভিনয় করতে নিষেধ করেন নোবেল। শিমু নোবেলের কথায় সিনেমায় অভিনয় করা বন্ধ করলেও এটিএন বাংলায় চাকরি করতেন। শিমুর এ চাকরি নোবেল ভালোভাবে নেননি। এ নিয়ে নোবেল ও শিমুর সংসারে কলহ চলে। নিজেদের দাম্পত্য জীবনের কলহের সব কথা নোবেল তার বন্ধু ফরহাদকে বলতেন।

২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি সকাল সোয়া ৮টায় নোবেলের বাসায় যান ফরহাদ। কলিংবেলের শব্দ শুনে শিমু দরজা খোলার পর ফরহাদকে ড্রইংরুমে বসতে দেন। এরপর বেডরুমে গিয়ে নোবেলকে ফরহাদের আসার সংবাদ জানান। নোবেল ড্রইংরুমে গিয়ে ফরহাদের সঙ্গে দেখা করে তাকে চা খাওয়ার কথা বলেন। এরপর তিনি রান্নাঘরে চা বানাতে যান। এর মধ্যে শিমু বেডরুমে বসে মোবাইল চালাতে থাকেন। এরপর নোবেল শিমুর মোবাইল দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি এবং একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়।

শব্দ শুনে ফরহাদ তাদের বেডরুমে ঢোকেন। নোবেল ফরহাদকে বলেন, ‘শিমুকে ধর, ওকে আজ মেরেই ফেলব।’ ফরহাদ ধরতে গেলে তাকে ফেলে দেন শিমু। এরপর নোবেল শিমুর গলা ধরতে গেলে শিমু তাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে নোবেল ফরহাদকে শিমুর গলা ধরতে বলেন। এরপর ফরহাদ শিমুর গলা এবং নোবেল দুই হাত চেপে ধরেন। একপর্যায়ে শিমু মেঝেতে পড়ে যান এবং নোবেল তার গলার ওপর পা দিয়ে দাঁড়ান। একপর্যায়ে শিমু নিস্তেজ হয়ে পড়েন। নোবেল ফরহাদকে দেখতে বলেন যে, শিমু বেঁচে আছেন কিনা। ফরহাদ শিমুর হাত দেখে বলেন, বেঁচে নেই।

এরপর শিমুর মরদেহ লুকোনোর পরিকল্পনা করতে থাকেন নোবেল ও ফরহাদ। নোবেল রান্নাঘর থেকে দুটি বস্তা এবং ফ্রিজের ওপর থেকে মিষ্টির প্যাকেট বাঁধার প্লাস্টিকের রশি আনেন। পরে ফরহাদ শিমুর মাথা উঁচু করে ধরলে নোবেল একটি বস্তার ভেতর শিমুর মরদেহের মাথার অংশ ঢোকান। এবং পা উঁচু করে ধরলে নোবেল পায়ের অংশ আরেকটি বস্তার ভেতর ঢোকান। এরপর নোবেল প্লাস্টিকের রশি দিয়ে দুটি বস্তা একসঙ্গে সেলাই করেন। পরে ফরহাদ শিমুর মরদেহ নোবেলের গাড়ির পেছনের সিটে ওঠান। এরপর কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আলীপুর ব্রিজ এলাকার ঝোঁপে ফেলে দেন।

গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তার পরিচয় মিলছিল না। পরে ওইদিন রাতে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নাম-পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পরদিন ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নোবেল ও তার বাল্যবন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করেন শিমুর ভাই হারুনুর রশীদ। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ওইদিন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরে এ মামলার দুই আসামি গত ২০ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

কিউএনবি/অনিমা/০৭.০৯.২০২২/সকাল ১০.৩১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit