স্পোর্টস ডেস্ক : শারজাহর উইকেট পড়ার ভুল কি তবে আবার করল বাংলাদেশ? ম্যাচের আগে-পরের দুই রকম কথায় তা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সময় যেখানে ‘উইকেট দেখে তো ভালোই মনে হচ্ছে’- বলেছিলেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, সেখানে ৭ উইকেটে হারের পর মোসাদ্দেককে বলতে শোনা গেল অন্য রকম। ৩১ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংসে দলকে ১২৭ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া এ ক্রিকেটার ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে যে দুষছিলেন শারজাহর উইকেটকেও।
এমনই যে ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের বল নিচু হওয়া ধীরগতির উইকেটের চেয়েও খারাপ মনে হতে পারে শারজাহর উইকেটকে, ‘মিরপুর আর এখানকার উইকেট পুরোপুরি আলাদা। মিরপুরে টার্নও হয়, আবার (উইকেট) ভালো থাকলে রানও হয়। এখানে ব্যাটিং করা ভীষণ কঠিনই ছিল। বল নিচুও হচ্ছিল। ’ এ রকম উইকেটে প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ফায়দা লুটে নেওয়ার সুযোগ বরং বাংলাদেশের জন্যই উন্মুক্ত ছিল। টস জিতে সাকিব সেটি হেলায় হারালেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠল। জবাবও মিলল। চাইলে এক শব্দেই সেটি প্রকাশ করা যায় – ভয়!
আরো নির্দিষ্ট করে বললে রশীদ খানের ভয়। রান তাড়ায় এই লেগস্পিনারকে খেলতেই চায়নি বাংলাদেশ। তাঁকে খেলার ঝুঁকি এড়াতেই যে সাকিব টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে মোসাদ্দেকের কথায়, ‘(রান তাড়ায়) ওভারপ্রতি ৭-৮ রান করে লাগলে আপনি চাইবেন না রশীদ খানের বিপক্ষে খেলতে। আমরা শুরুতে এগিয়ে থাকতে চেয়েছি। ’ টস জেতার পর সাকিবকেও বলতে শোনা গিয়েছে একই কথা, ‘স্কোরবোর্ডে বড় রান জমা করা গেলে আফগানিস্তানের পক্ষে রান তাড়া করা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। ’
যদিও আগে ব্যাট করা বাংলাদেশের জন্যই ব্যাটিংটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। অল্প রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই তবু জমিয়ে তোলা গিয়েছিল। বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন আফগান ব্যাটাররাও। তাই একাদশে আরেকজন স্পিনার রাখা উচিত ছিল কি না, অবধারিতভাবেই সে জিজ্ঞাসার মুখেও পড়লেন মোসাদ্দেক। একমত হলেন না অবশ্য, ‘হেরে যাওয়ার পর মনে হয়, অনেক কিছু করা যেত। তবে আমার মনে হয়, সব কিছুই ঠিক ছিল। ব্যাটিংয়ে আরেকটু ভালো করলে ম্যাচ আমাদের পক্ষেই থাকতো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি আমরা করতে পারিনি। ’
তিন পেসার খেলানোর কারণে বাংলাদেশ হেরেছে বলেও মনে করেন না এই অফস্পিনিং অলরাউন্ডার, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের সবাই জানে, আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণ কতটা শক্তিশালী। সেদিক থেকে চিন্তা করলে আমাদের অত বড় টার্ন করানোর মতো স্পিনার নেই। রিস্ট স্পিনারও নেই আমাদের। সবাই অর্থোডক্স। এভাবে যদি বিশ্লেষণ করেন যে বোলারদের জন্য ম্যাচ হেরেছি, ব্যাপারটি আসলে ওরকম না। এখানে হার্ড লেন্থের বল খেলা কঠিন। ১২৭ পর্যন্ত গিয়েছি, যেটি যথেষ্ট ছিল না। ’
১৭ ও ১৮তম ওভারে নাজিবউল্লাহ জাদরানের ছক্কার ঝড়ে উড়ে যায় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ ও সাইফ উদ্দিনের ওই দুই ওভার থেকে আসে ৩৯ রান। অথচ বাংলাদেশের ইনিংসে এ রকম একটি ওভারও আসেনি, যেটিতে ১৫-২০ রান তোলা গেছে। হারের পর এই অভাবের কথাও উচ্চারিত হলো মোসাদ্দেকের মুখে, ‘এই ব্যাপারটি মিসিং ছিল। এ রকম ওভার আমাদেরও আসতে পারত। কিন্তু উইকেট হারালে এই কাজটি কঠিন হয়ে যায়। উইকেট হাতে নিয়ে যদি ১৫ ওভার পর্যন্ত যেতে পারতাম, তাহলে ভিন্ন কিছুও হতে পারত। ’
কিউএনবি/আয়শা/৩১ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:৩৫