ডেস্ক নিউজ : জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন, তবে এক মুহূর্তের জন্য থেমে যাননি। নিজেদের স্বপ্নকে পূরণের লক্ষ্যে অদম্য যোদ্ধা তারিফ মাহমুদ চৌধুরী, তৃণা আক্তার সেতু ও আকাশ দাস। ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে মানবিক বিভাগ থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৩ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তারা পরীক্ষা দেন।
এসময় তাদের সহযোগী হিসাবে তিনজন ব্যক্তিকে নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক মিতা শবনমের তত্বাবধানে পরীক্ষা দেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী তৃনা আক্তার সেতু এসেছেন গোপালগঞ্জ থেকে। লোহাচূড়া আলিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে পড়া শেষে ভর্তি হন মোকছেদপুর সরকারি কলেজে। এবার তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রথমবার কোথাও ভর্তির সুযোগ না পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রস্তুত করেছেন নিজেকে।
তৃনার বড় ভাই সোহেল খান বলেন, জন্ম থেকেই আমার বোন ত্রুটিপূর্ণ। তবুও অদম্য সে, নিজের একান্ত ইচ্ছায় লেখাপড়া চালিয়ে গেছে।
একইভাবে অন্যদের তুলনায় সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী নরসিংদীর আকাশ দাস। নরসিংদীর মৌলভি কারারচর তোফাজ্জেল হোসেন উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও মিরপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার ইচ্ছা ভালো একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।
অপর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তারিফ মাহমুদ চৌধুরী জন্ম থেকেই অসুস্থ। রাজবাড়ী বেগগাছি মুজাম্মেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি ও ২০২১ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ। তবে এই বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক নন তিনি।
তারিফ মাহমুদের মা আফরোজা খান মজলিশ বলেন, জন্ম থেকেই ত্রুটিপূর্ণ তারিফ, তবে পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ অনেক বেশি।
এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ড. মিতা শবনম বলেন, “প্রথমবারের মতো এই তিনজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”
কিউএনবি/অনিমাা/১৪ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:৩৩