ডেস্কনিউজঃ শ্রীলঙ্কায় গত কয়েকমাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ গত শনিবার (৯ জুলাই) বিপজ্জনক মোড় নেয়। এদিন হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা জোর করে কলম্বোতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনে ঢুকে পড়ে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেও বিক্ষোভকারীরা ঢুকে যায়। তবে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশের আগেই বাসভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় গোটাবায়া ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। এরপর থেকে এই দুই নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা আর যায়নি। এছাড়া এই দুই শীর্ষ নেতা বর্তমানে কই অবস্থান করছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশ তৈরি হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের অবস্থান সর্বজনীনভাবে অস্পষ্ট হলেও সোমবার (১১ জুলাই) কর্মকর্তারা সোমবার আল জাজিরাকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বর্তমান ঠিকানা ঘনিষ্ঠভাবে সুরক্ষিত গোপনীয়।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুশাল পেরেরা আল জাজিরাকে বলেন, প্রেসিডেন্টকে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারের মাধ্যমে একটি নৌ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার বিকল্প ছিল। যা গোটাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসের রাষ্ট্রপতির সময় নির্মিত করা হয়।
পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টপদত্যাগের কথা নিশ্চিত করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৭৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট গোটাবায়াকে কলম্বো বন্দর দিয়ে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। পেরারা আরও বলেন, মাহিন্দা রাজাপাকসের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে গানবোটগুলো নৌবাহিনীর ক্যাম্পে প্রস্তুত ছিল।
তিনি আল জাজিরাকে আরও বলেন, আমার অনুমান গোটাবায়া রাজাপাকসেকে হয়তো আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কারের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর নৌবাহিনী ও প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়ে গোটাবায়াকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পেরারা আরও বলেন, কিন্তু আমি আসলে জানি না সেই জাহাজটি বর্তমানে কোথায় আছে। এটি মোটামুটি হিসেব মাত্র। সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে অনেম মিডিয়া জানিয়েছে, গোটাবায়া রাজাপাকসে বর্তমানে সমুদ্রে একটি নৌযানে অবস্থান করছেন।
শ্রীলঙ্কার জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান সামরিক বাহিনীর শ্রীলঙ্কার জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান সামরিক বাহিনীর
গোটাবায়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো আল জাজিরাকে জানায়, প্রেসিডেন্ট শ্রীলঙ্কা সীমান্তের কাছে একটি জাহাজে থাকতে পারেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন।
এদিকে ইতোমধ্যে গোটাবায়া আগামী বুধবার পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রীও পদত্যাগে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কা ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতিতে জর্জরিত এবং ৭০ বছরের ইতিহাসে দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। যার কারণে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধ আমদানি করতে লড়াই করতে হচ্ছে তাদের।
দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা শেষ হয়ে গেছে এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের জন্য পেট্রোল এবং ডিজেল বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হয়েছে, যার ফলে জ্বালানির জন্য দিনব্যাপী দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
কিউএনবি/বিপুল/১১.০৭.২০২২/ সন্ধ্যা ৬.১৭