স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর আকবর হজ গ্রুপের প্রতারনার শিকার অর্ধশতাধীক হাজীর রোষানল থেকে রক্ষা পেতে আত্মগোপনে থাকা মোয়াল্লিম মাহাবুবুর রহমান বিদেশ পাড়ি দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন বলে জানাগেছে। এ দিকে মাহাবুবুরের অপকর্মের সংবাদ প্রকাশিত হবার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় আরো প্রতারিত হওয়া ভূক্তভোগীদের সন্ধান মিলছে।
জানাযায়, আকবর হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকীর ভাতিজা মোয়াল্লিম মাওলানা মাহাবুবুর রহমান হজে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সাল থেকে অধ্যাবধি পর্যন্ত অর্ধশত ব্যক্তির কাছ থেকে পাসপোর্টসহ অগ্রিম বাবদ প্রায় দ্ইু কোটি টাকা আদায় করে লাপাত্তা হয়েছেন। ফলে তার প্রতারনার কারনে হজ বঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এ সংক্রান্ত রবিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর প্রতারিতদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন করে অভিযোগ রয়েছে হজে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাহাবুবুর ২০১৮ সালে উপজেলার রতনদীয়া গ্রামের মোমিন খান ও তার স্ত্রী ছায়রা বেগমের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ সাড়ে তিনলাখ টাকা গ্রহন করেন।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে এখনও হজ পালনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ভূক্তভোগী মোমিন খানের ছেলে পৌরশহরের খান গার্মেন্টের মালিক মহিউদ্দিন খান অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বহু ওয়াদা করেও মাহাবুবুর রহমান তাদের টাকাও ফেরত দেননি। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে মাহাবুবুর উপজেলার খানপুর এলাকার কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলামকে ওমরাহ পালন করতে নিয়ে যাবার কথা বলে কয়েক লাখ টাকা নেন। কিন্তু তাকেও নিয়ে যাওয়া হয়নি। নজরুল ইসলামের ছেলে ফিরোজ ইসলাম জানান, মাহাবুবুরের কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে তার পিতা মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। এখনও তাদের টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। এভাবে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা আদায় করে আত্মসাত করা হয়েছে।
তার এই প্রতারনার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এলাকায় তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। হজ পালনে বঞ্চিতদের রোষানল থেকে রক্ষা পেতে মাহাবুবুর এলাকা ছেড়ে ঢাকায় আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে মাহাবুবুরের অপকর্মের দায় নিতে অস্বীকার করে আকবর হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকী জানিয়েছেন, এসব ব্যক্তির হজ বাবদ কোন টাকা মাহাবুবুর তার কাছে জমা দেননি।ফলে এসব ভূক্তভোগীরদের মধ্যে অনেকেই এখন মাহাবুবুরের বাড়িতে হানা দিচ্ছেন। তার পিতা মতিয়ার রহমান অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত আকরাম বিশ্বাস ও তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের কাছ থেকে নেওয়া ১২ লাখ টাকা ঈদের পর ফেরত দেওয়ার অঙ্গিকার করেছেন।
এ দিকে জানাগেছে হজ বঞ্চিতদের রোষানল থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মাহাবুবুর রহমান বিদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে ভূক্তভোগীরা জানান, এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) নূর ই আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ দিলেই তিনি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
কিউএনবি/আয়শা/০৩ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:২৮