সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

‘দুনিয়ায় পরীক্ষা এভাবেই আসে’

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২
  • ১২৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : মানুষের জীবনের প্রতিটি দিন এক রকম কাটে না। ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন সর্বত্রই পরিবর্তন হতে থাকে। কখনো দিন কাটে সূখে, কখনো কাটে দুঃখে। কখনো আসে সচ্ছলতা। আবার  কখনো দেখা দেয় দরিদ্রতা। কখনো থাকে প্রাচুর্য কখনো আবার অভাব-অনটন। কখনো ভোগ করে সুস্থতা কখনো আক্রান্ত হয়ে পড়ে রোগ শোকে। কখনো দেখা দেয় সুদিন, আবার কখনো আসে দুর্ভিক্ষ। কখনো আসে বিজয়, আবার কখনো আসে পরাজয়। কখনো আসে সম্মান আবার কখনো দেখা দেয় লাঞ্ছনা।

এ অবস্থা শুধু বর্তমান আমাদের সময়েই হয়ে থাকে, তা নয়। এটা যুগ যুগ ধরে এভাবেই আবর্তিত হয়ে আসছে। আসল কথা হল, আমরা এই যে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হতে দেখছি, এটি হাকীম-প্রজ্ঞাময় মহান আল্লাহর হিকমতের একটি নিদর্শন। আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি সুন্দর নাম রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল ‘হাকীম’ অর্থাৎ প্রজ্ঞাময়। আল-কুরআনুল কারীমে এ নামটি নব্বই বারের বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও ‘আল হাকীম’ আবার কোথাও ‘হাকীম’ রূপে।

আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের সংকট ও সমস্যা দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। তিনি যেমন বিপদ আপদ, দুঃখ কষ্ট, সংকট সমস্যা, অভাব দরিদ্রতা, রোগ ব্যধি,  লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, যুদ্ধে পরাজয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ  ইত্যাদি দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন, তেমনি সুখ শান্তি, সচ্ছলতা, প্রাচুর্য, ধন সম্পদ, সুখ্যাতি সম্মান সুস্থতা, বিজয় ইত্যাদি দিয়েও মানুষকে পরীক্ষা করেন।

যেমন তিনি বলেন –
‘আর মানুষ তো এমন যে, যখন তার রব তাকে পরীক্ষা করেন, ফলে তাকে সম্মান দান করেন এবং দান করেন নেয়ামত, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর যখন তিনি তাকে পরীক্ষা করেন এবং তার রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন সে বলে আমার রব আমাকে অপমানিত করেছেন।’ (সূরা আল ফাজর, আয়াত ১৫-১৬)

এ আয়াতসমূহে আমরা দেখলাম, আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন,  তিনি মানুষকে যেমন সুখ শান্তি নেয়ামত দিয়ে পরীক্ষা করেন। তেমনি অভাব অনটন দুঃখ কষ্ট দিয়েও পরীক্ষা করে থাকেন। তিনি এর মাধ্যমে অযথা তার বান্দাদের কষ্ট দিতে চান না। বরং এ সকল পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি বান্দার কল্যাণ, উন্নতি ও মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

কু’রআনে এমন কিছু আয়াত রয়েছে যেগুলো আমাদেরকে জীবনের বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়। কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়: আমরা কীভাবে নিজেরাই নিজেদের জীবনটাকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দিই। আর কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে জীবনের সব দুঃখ, কষ্ট, ভয় হাসিমুখে পার করার শক্তি যোগায়।

‘দুনিয়ায় পরীক্ষা এভাবেই আসে। আর আখেরাতের আজাব তো আরো অনেক কঠিন। যদি ওরা জানত! অবশ্য আল্লাহ-সচেতনদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের কাছে অবশ্যই রয়েছে সুখ-উপচানো জান্নাত। তা নয়তো কি আমি সমর্পিতদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করব? তোমাদের কী হয়েছে? তোমাদের (সত্য-মিথ্যার) বিচারের ভিত্তি কী? তোমাদের কাছে কি কোনো কিতাব আছে, যাতে লেখা রয়েছে যে, তোমরা যেভাবে পছন্দ করবে সেভাবেই চলতে পারবে (অর্থাৎ প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে নীতি-নৈতিকতা পাল্টে ফেলতে পারবে)? আমি কি তোমাদের সাথে এমন কোনো অঙ্গীকার করেছি যে, মহাবিচার দিবসেও তোমরা যা দাবি করবে, তা-ই পাবে (এমনকি জান্নাতও)? সত্য অস্বীকারকারীরা যখন এই কোরআনের সতর্কবাণী শোনে, তখন তারা তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকায় যেন তোমাকে খুন করে ফেলবে! আর বলে, ‘এ-তো এক বদ্ধ উন্মাদ।’ (অতএব তুমি ধৈর্য ধরো!) কারণ এ কোরআন তো সমগ্র মানবজাতির জন্যে উপদেশ!’ (সূরা কলম)

‘হা-মিম। ২-৩. সর্বশক্তিমান সর্বজ্ঞ আল্লাহ এই কিতাব নাজিল করেছেন, যিনি পাপমোচন করেন, তওবা কবুল করেন, যিনি শাস্তিদানে কঠোর ও অনুগ্রহ বিতরণে অতুলনীয়। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। সবাইকে ফিরে যেতে হবে তাঁরই কাছে।’ (সূরা মুমিন)

‘এরা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? করলে নিশ্চয়ই দেখত এদের পূর্ববর্তীদের পরিণতি কী হয়েছিল। ওরা ছিল এদের চেয়ে শক্তিমান। ওদের কীর্তি এখনো জমিনে দৃশ্যমান। কিন্তু অপরাধের জন্যে আল্লাহ ওদের শাস্তি দিয়েছিলেন। ওদের শাস্তি দেয়ার কারণ ছিল—সত্যের সুস্পষ্ট প্রমাণসহ রসুলরা আসার পরও ওরা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। আর আল্লাহর শাস্তি থেকে ওদের রক্ষা করার কেউ ছিল না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশক্তিমান, (পাপাচারীদের) শাস্তিদানে কঠোর।’ (সূরা মুমিন)

‘ওরা কি পৃথিবী ঘুরে দেখে নি, ওদের পূববর্তীদের পরিণতি কী হয়েছিল? তারা ছিল ওদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি, শক্তিতে প্রবল, প্রযুক্তিতে উন্নত। কিন্তু শানশওকত জৌলুস কিছুই ওদের উপকারে আসে নি।’ (সূরা মুমিন)

‘আমি কোরআনকে খুব সহজ করে দিয়েছি, যাতে করে তোমরা এর শিক্ষা মনে রাখতে পারো। (হে মানুষ!) তুমি কি এর শিক্ষা হৃদয়ে ধারণ করবে না?’ (সূরা কামার)

‘ফেরাউন সম্প্রদায়ের কাছেও সতর্ককারী এসেছিল। কিন্তু ওরা আমার সকল নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করেছিল। আমি ওদের কঠোর শাস্তি দিলাম, যা শুধু মহাপরাক্রমশালী সর্বশক্তিমানের পক্ষেই দেয়া সম্ভব।’ (সূরা কামার)

‘অতীতে তোমাদের মতো বহুদলকে আমি ধ্বংস করেছি। ওদের এই পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার মতো কেউ নেই কি? ওদের সমস্ত কার্যকলাপ, ছোট-বড় সবকিছু রেকর্ড হয়েছে সুরক্ষিত প্রক্রিয়ায়—ওদের আমলনামায়।’ (সূরা কামার)

কিউএনবি/অনিমা/২৮.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১১:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit