খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুরে আদিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এই সময় উভয় পক্ষের ৩০টি বসত বাড়ি ও ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর সহ ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। এক পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক এবং বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সাকিদার ও অপর পক্ষে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য কোব্বাত মাদবর নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানাগেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত ইউপি নির্বাচনে বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এমদাদ মাদবরকে পরাজিত করে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য কোব্বাত মাদবর সদস্য নির্বাচিত হয়। সেই থেকেই পরাজিত সদস্য প্রার্থী ও বিজয়ী সদস্য এবং তাদের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সোমবার রাতে পরাজিত প্রার্থি এমদাদ মাদবরের সমর্থকদের সাথে বিজয়ী সদস্যের সমর্থকদের কথা কাটাকাটি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে চেয়ারম্যানের সমর্থক সফি বেপারী, লিটন মুন্সী, ফারুক মাদবর ও এমদাদ মাদবরের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য কোব্বাত মাদবরের সমর্থক হাতেম ঢালী, স্বপন, লালমিয়া ও কাশেমের দোকান ও বাড়িতে ভাংচুর করে। পরে কোব্বাত মাদবর, ছরোয়ার খা, কুদ্দুস মুন্সীর নেতৃত্বে লাল মিয়া বেপারী, রশিদ বেপারী, জলিল বেপারী, মোকছেদ বেপারী, হায়দার সরদার, হেদায়েত সরদার ও ইউনুছ সরদারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও ইউপি সদস্য কোব্বাত মাদবর বলেন, এমদাদ মাদবর, লিটন মুন্সী, সফি বেপারী ও ফারুক মাদবর তুলাসার ও চিকন্দী ইউনিয়ন থেকে লোকজন নিয়ে এসে আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুট করেছে। জলিল ও মোকদের গুরুতর আহত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিনোদপুর ইউপির সাবেক সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এমদাদ মাদবর বলেন, আমি বা আমার সমর্থকরা কারোর বাড়িঘর বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট করেনি। কোব্বাত মাদবর ও তার সমর্থকরা আমার সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করেছে। বাধা দেওয়ায় তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।
জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সাকিদার বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এমদাদ মাদবর ও কোব্বাত মাদবর নির্বাচনী প্রতিহিংসার জেরে এলাকায় মারামারি করেছে। সেখানে আমার কোন নেতৃত্ব বা সম্পৃক্ততা নাই। পালং মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ও আমি ঘটনাস্থলে আছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন সহ টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/৩১.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:০০