ডেস্ক নিউজ : মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২০ মে (শুক্রবার) থেকে ৬৫ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে সকল ধরনের মাছ আহরণ বন্ধ হচ্ছে। প্রতিবছরের ন্যায় ইতিমধ্যে সরকারিভাবে প্রচার-প্রচারণা ও সভা করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মৎস্য বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসন। তবে একই সময় ভারতের জলসীমানায় মাছ ধরা বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে বাংলাদেশি জেলেদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ এ সুযোগে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
এদিকে, জেলেদের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তা হিসেবে শরণখোলা উপজেলার চার হাজার সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনের চাল বরাদ্দ এসেছে। এমন অবস্থা বাগেরহাটের সব উপজেলায়। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক সভায় জেলেদের চাহিদার তুলনায় এতো কম বরাদ্দ আসায় নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।
শরণখোলার সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে জেলে রয়েছে ১৪৪০ জন অথচ বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১১০ জনের। এখন এ চাল আমি কিভাবে বিতরণ করবো। একই অবস্থা রায়েন্দা ইউনিয়নে ১২০০ জেলের মধ্যে চাল এসেছে ১১০ জনের, খোন্তাকাটায় ৯০০ জেলের মধ্যে ১০৪ জন এবং ধানসাগরে ৫৮০ জনের মধ্যে মাত্র ৫০ জন জেলের চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এনিয়ে তারা এখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলে তারা জানান।
শরণখোলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, শরণখোলায় মোট জেলের সংখ্যা ৬৭৪৪ জন। এর মধ্যে সমুদ্রগামী জেলে হচ্ছে চার হাজার। ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের জন্য প্রতি জেলে ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। সে হিসেবে মাত্র ৩৭৪ জন জেলের চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে এখানে আমার কিছু করার নেই।
বাংলাদেশ ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, বঙ্গোপসাগরে আমাদের নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জনসীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়। পরে আমাদের জেলেরা আর মাছ পায় না। যে কারণে গত বছর আমার ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আমার মতো এই মৎস্য সম্পদের নির্ভরশীল বহু ব্যবসায়ী লোকসানে পরে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাই ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ও ভারতের একই সময় দেওয়ার দাবি তার।
শরণখোলা উপজেলা ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের জেলেরা না খেয়ে থাকে। আর ভরতীয় জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যায়। আমরা তা দেখলেও কিছু করার নেই।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম পাওয়া গেছে। তবে সব জেলেরা যাতে পায় সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি আমাদের নলেজে রয়েছে। দুই একটি ট্রলার হয়তো ডুকতে পারে। তবে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকি যাতে ভারতীয় জেলেরা আমাদের সাীমানায় প্রবেশ করে মাছ ধরতে না পারে।
কিউএনবি/আয়শা/১৮.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:২৫