খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে নতুন বোরে ধান উঠতে শুরু করায় চালের দাম কিছুটা কমলেও ভোর হলেই বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যের মূল্য। গত দুই দিনে কেজি প্রতি ৫টাকা আটার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনি ভাবে ডিম, মাছ ও মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। শাক সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলছে ক্রেতার মাঝে। বর্ধিত মূল্যে ভোজ্য তেল বাজারে আসায় সরবরাহ বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্্েরট ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা বিভিন্ন হাট-বাজারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। দ্রব্য মূল্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে বাক-বিতন্ডা লেগেই থাকছে। ভাড়া আদায় নিয়ে কথা কাটাকাটি হতে দেখা গেছে যাত্রি ও রিক্সা চালকদের মধ্যেও।
ক্রেতা মনির হোসেন জানায়, সে একজন চাকুরিজীবী। তিনি ৩ মাস পূর্বে যে বেতন পেয়েছেন এই মাসেও সমান বেতন পেয়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে কোন কোন দ্রব্যমূল্য দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। চাহিদামতো পণ্য সাধ্যের মধ্যে ক্রয়ের জন্য এই দোকান ওই দোকান ঘুরছেন সে। কম দামে পণ্য না পেয়ে চাহিদার অর্ধেক পণ্য নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। পরিবারের ভরণপোষণ এখন তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। রিক্সা চালক বোরহান জানায়, রিক্সা চালিয়ে আগে ৫০০ টাকা রোজগার করে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে ছিলাম। এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০০ টাকায় কিছুই হয় না। যাত্রির কাছে ১০ টাকা বেশী দাবী করলে খারাপ আচরণ করে। এখন আমাদের মরন ছাড়া উপায় নাই।
মাছ মাংসের বাজার ঘুরে হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানায়, গরুর মাংস ৭০০, খাসির আড়ালে ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা কেজি। ডিম ৪৫ টাকা হালি। সয়াবিন ২০০ টাকা লিটার, আটার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা। গ্যাস সিলিন্ডার ১৪০০ টাকা। মাছ ও মুরগির দামও বেড়েছে। এমনি ভাবে সকল পণ্যের দাম বাড়ায় হোটেলে কোন ব্যবসা হয় না। হয়তো খাবারের দাম বাড়িয়ে দিবো নয়তো ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতার সাথে ঝামেলা বাঁধে। পণ্যের চাহিদা ও বিক্রি কমেছে বলে জানায় আংগারিয়া বাজারের খুচরা মুদী দোকানী বিশ্বনাথ।
পাইকারী ব্যবসায়ী কাজল সাহা জানায়, আটার দাম কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। সরকার নির্ধারিত বর্ধিত মূল্যে তেল বিক্রি করছি। এখন পণ্যের দাম চওড়া হলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। চাল ব্যবসায়ী আবুল বাশার দুলাল জানায়, বাজারে সকল প্রকার চালের সরবরাহ রয়েছে। বাজারে নতুন ধান আসায় সকল প্রকার চালের দাম কমেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ১০ টাকাও কমেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের জেলার সহকারী পরিচালক সুজন কাজী বলেন, বাজারে নতুন মূল্যের ভোজ্য তেল আসায় সংকট কমেছে। দুই দিন ধরে আটার দামও বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৬.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৫০