শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন

মনিরামপুরে পানিবদ্ধ বিচালী পঁচে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকটের আশংকা

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) ।
  • Update Time : শনিবার, ১৪ মে, ২০২২
  • ১৭৪ Time View

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে ঘুর্নিঝড় অশনীর বিরূপ প্রতিক্রীয়ায় কয়েকদিনের ধারাবাহিক ঝড়বৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবদ্ধ হয়ে ক্ষেতের কাটাধানে ইতিমধ্যে চারাগজিয়েছে। তার ওপর পানিবদ্ধ অধিকাংশ ক্ষেতের বিচালী পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এলাকায় এবার গোখাদ্যের চরম সংকটের আশংকা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে বোরোধান নিয়ে চাষীরা হয়ে পড়েছেন চরম দিশেহারা। উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এবার মনিরামপুরে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ২৭ হাজার পাঁচ’শ হেক্টর জমি। কিন্তু ভবদহের জলাবদ্ধতার কারনে এবার চাষের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবার চাষ করা হয় ২৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে। মৌসুমের শুরুতে অনুকুল আবহাওয়া এবং বীজ, সার, কিটনাশকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় এবার ফলন বেশ ভাল হয়। কিন্তু মাঝামাঝি সময়ে ক্ষেতে দেখা ব্লাষ্ট রোগের আক্রমন। ফলে কিছুটা হলেও শেষ পর্যায়ে ফলনে ভাটা পড়ে। অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় চাষীরা ক্ষেতের ধান কাটতে শুরু করেন। তখন ঘূর্নিঝড় অশনীর প্রভাবে কয়েকদিন ধারাবাহিক ঝড়বৃষ্টিতে বোরো ক্ষেতের পাকাধান লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে।

গালদা গ্রামের কৃষক এনামুল হক সোহান জানান, তিনি ইতিমধ্যে ১৫ বিঘা জমির ধান কেটেছেন। কিন্তু ঝড় বৃষ্টিতে কাটাধান ক্ষেতেই লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তার ওপর কয়েকদিন ক্ষেতে পানিবদ্ধ থাকায় কাটাধানে ইতিমধ্যে চারা গজিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষক আশরাফ হোসেন জানান, ধানগাছে চারা গজানোর পর ওই ধান ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানিতে ভিজে ধান ছাড়া বিচালীও পঁচে গেছে। আক্ষেপ করে শ্যামকুড় এলাকার রফিকুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, আবদুর রশিদসহ অধিকাংশ কৃষক জানান, ধারদেনা করে বোরো চাষ করা হয়েছিল।ফলন ও বর্তমান বাজার দর মোটামুটি ভাল(প্রতিমন ১১ থেকে ১২’শ টাকা) থাকায় উচ্চমূল্যে শ্রমিক নিয়ে ক্ষেতে থেকে ধান কাটা হয়। কিন্তু গত সোমবার থেকে কয়েকদিনের ধারাবাহিক ঝড়বৃষ্টির কারনে ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তোলা সম্বব হয়নি। ফলে পানিবদ্ধ হয়ে অধিকাংশ কাটাধানে চারা গজিয়েছে। মাঝিয়ালী গ্রামের চাষী নিরঞ্জন দাস জানান, পানিবদ্ধ থাকায় কাটাধানে চারা গজানো ছাড়াও বিচালী পচে গেছে। ফলে এলাকায় এবার গোখাদ্যেরও চরম সংকটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে চাষীরা পড়েছে মহাবিপাকে। পৌরশহরের পাইকারী ধান ক্রেতা মোদাচ্ছের আলী জানান, কয়েকদিনের ঝড়বৃষ্টিতে কৃষকের পাকাধানে মই দেয়ার মত হয়েছে।

পৌর শহরের গাংড়া, দূর্গাপুর, কামালপুর, মহাদেবপুর, বিজয়রামপুর, উপজেলার রাজগঞ্জ, নেঙ্গুড়াহাট, খেদাপাড়া, কাশিমনগর, ভোজগাতী, হরিহরনগর, মশ্বিমনগর, চিনাটোলা, নেহালপুর, দূর্বাডাঙ্গা, ঢাকুরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বোরোধান নিয়ে এ ধরনের সমস্যার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জলী রানী জানান, কাটাধানে চারা গজানোর ফলে তা মানবখাদ্যের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। অন্যদিকে বোরো আবাদের বিচালী থেকে মনিরামপুর উপজেলায় ৭০ ভাগ গোখাদ্যের যোগান হত। কিন্তু বিচালী পঁচে যাবার দরুন এবার গোখাদ্য সংকটের মুখে পড়তে পারে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান ঝড় বৃষ্টিতে বিশেষ করে ক্ষেতের কাটা ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে জানান। ইতিমধ্যে উপজেলার ৮০ শতাংশ ধান ক্ষেত থেকে ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে।তবে আবাহওয়া অনুকুলে থাকলে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই বাকী ধান চাষীরা ঘরে তুলতে পারবেন ।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৪.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit