ডেস্ক নিউজ : যশোরের চৌগাছায় চলতি বোরো মৌসুমে ১৮ হাজার ছয় শ ৩০ হেক্টোর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় কৃষকদের পরিচর্যায় মাঠের ধান পেকে গেছে। সোনালী বর্ণে আর শীষে ধানগুলো কৃষকের উঠোনে যাবার অপেক্ষায়। কিন্তু ঈদের দিন ঝড়-বৃষ্টির ফলে অধিকাংশ মাঠের ধান জমিতে পড়ে আছে। এরই মধ্যে ঘুর্ণিঝড় আসানির খবরে মহা বিপাকে কৃষকরা। শ্রমিক সংকটেও রয়েছেন দিশেহারা। কৃষকরা বলছেন, ধান মাঠে পড়ে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। শুধু আকাশটা খোলসা (পরিষ্কার) পাওয়া দরকার। আজ শনিবার (৭ মে) সকালে সিংহঝুলী, ফুলসারা, মশিউরনগর, জগন্নাথপুর গ্রামের বিস্তৃর্ণ মাঠে গিয়ে দেখা যায় ধান কাটার কাজে তেমন শ্রমিক নেই। প্রান্তিক চাষী ও বর্গা চাষীরা নিজের ধান কাটায় ব্যস্ত।
এ সময় কথা হয় জগন্নাথপুর গ্রামের উত্তরপাড়া মাঠের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। এর মধ্যে একজন জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। হতাশকণ্ঠে কৃষক বজলুর রহমান বলেন, সাড়ে তিন বিঘা আমি ধান করেছি। ঈদের দিন ঝড়-বৃষ্টির কারণে জমিতে ধান পড়ে আছে। জোনের (শ্রমিক) অভাবে ধান কাটতি পারছিনে। আবার নাকি ঘূর্ণঝড় হানা দেবে। আমার মতো ক্ষুদ্র চাষিদের আল্লাহয় ভরসা। ধান কাটতে আসা সংশ্লিষ্ট ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল লতিফ জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে এসেছি। এ ছাড়া কিছু করার নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিবার শ্রমিকরা আসে। এবার এখনো আসিনি। কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, মাঠে ১২ বিঘা ধান আছে। খুব টেনশনে আছি। জনের (শ্রমিক) বাজারে যেয়েও জোন পাচ্ছিনে। আমার একার পক্ষে সব ধান কাটা সম্ভব না।
মশিউর নগরের কৃষক হারুণ জানান, মাথায় টোকা (মাথাল) হাতে কাচি নিয়ে ঘুরেঘুরে বেড়াচ্ছি। কোনো জোন নেই। এই অবস্থায় ঝড়ের কথা শুনে আরো মনটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। কখন কি যে হয় সেই চিন্তায় কিছু ভালো লাগছেনা।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় ১৮ হাজার ছয় শ ৩০ হেক্টোর জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের বঙ্গবন্ধু, ব্রি ৪৯, ব্রি ৬৩, ব্রি ৮৮, ব্রি ৮৯, এরাইজ, মিনিকিট ও বাসমিত ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টোর জমির ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পেরেছেন। বাকি ১৩ হাজার হেক্টোর ধান এখনো মাঠে। তিনি বলেন ঘূর্ণীঝড় আসানির সতর্কতা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের জানিয়ে দিয়েছি। যাতে কৃষকরা দ্রুত ধান কাটতে পারেন।
কিউএনবি/আয়শা/৭ই মে, ২০২২/২৪ বৈশাখ, ১৪২৯//বিকাল ৩:৩২