মো. সাইদুল আনাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর জমিজমা বিরোধেরজেরধরে গ্রাম্য শালিস শেষে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আহত জাহাঙ্গীর আলম টুটুল মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর আলম টুটুল প্রাগপুর রঘুনাথপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। বুধবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ছরিকাঘাতের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম টুটুল ও সাবেক ইউপি সদস্য লিপটন হোসেন তোতা আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় জালাল নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত টুটুলের স্বজনরা জানান, স্থানীয় একটি জমি নিয়ে টুটুলের পিতা রুহুল আমিনদের সাথে একই গ্রামে মৃত জফের শাহের ছেলে মনিরুল ইসলামদের দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছিল। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান। কয়েকদনি আগে মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন মামলা মিমাংসা চেয়ে। মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে জেনেও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাকী ওরফে বাকি কাজি মিমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে তার কার্যালয়ে গত বুধবার দুপুরে মিমাংসায় বসেন। এক পর্যায়ে নিহত জাহাঙ্গীর আলম টুটুল ও মনিরুল ইসলামের লোকজনের সাথে বাকবিতন্ডায় শুরু হলে সালিশ বন্ধ করে দেন চেয়ারম্যান। উভয় পক্ষের লোকজন ইউপি কার্যালয় ত্যাগকালে মনিরুলের লোকজন রুহুল আমিনদের লোকজনের উপর হামলা চালায়।
এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন রুহুল আমিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম টুটুল ও সাবেক মেম্বর লিপ্টন হোসেন তোতাকে ছুরি দিয়ে আঘাতসহ বেধরক মারপিট করে। আহতদের দৌলতপুর হাসপাতালে নেয়া হলে জাহাঙ্গীর আলম টুটুলের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অবস্থা অবনতির দিকে গেলে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোর রাতে টুটুলের মৃত্যু হয়। নিহত টুটুলের বোন অ্যাডভোকেট নাজনীন আক্তার রুপা জানান, জমির বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা চলামান থাকার পরও স্থানীয় চেয়ারম্যান কিভাবে শালিস করেন। এখানে চেয়ারম্যানের ইন্ধন থাকতে পারে।
এ বিষয়ে আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাকী বলেন, শালিশের জন্য মনিরুল ইসলাম নামে একজন আবেদন করেন। কিন্তু আদালতে মামলা চলমান থাকায় বিষয়টি জানতে পেরে শালিস না করে আদালতের মাধ্যমে নিস্পতি করার জন্য উভয় পক্ষকে পরামর্শ দেয়া হয়। পরিষদ থেকে উভয় পক্ষ চলে গিয়ে কেন মারামারি করে তা জানা নেয়। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত এস.এম. জাবীদ হাসান বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে শালিস বসেছিল। পরে মিমাংসা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়ছিল। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/৬ই মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:১৪