মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন

ইউক্রেন থেকে হেঁটে পোল্যান্ড পৌঁছানো বাংলাদেশির অভিজ্ঞতা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২
  • ৮০ Time View

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :   রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর ইউক্রেন থেকে অসংখ্য মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন। এমনই এক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী শেখ খালিদ ইবনে সেলিম। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে, দুদিন পায়ে হেঁটে পোল্যান্ড সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন তিনিসহ অসংখ্য মানুষ।

তিনি বলেন পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে যাওয়ার সময় কোন কোন জায়গায় ৩০-৩৫ কিলোমিটার আবার কোন কোন জায়গায় ৩৮-৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ গাড়ির লাইন ছিলো।

আবার সীমান্তের দিক থেকে আসার সুযোগ ছিলো না। যারা সীমান্তের দিকে যাচ্ছিলেন তাদের মধ্যে সামর্থ্যবান নারী পুরুষকে হেঁটে যেতে হবে। এই ছিল পরিস্থিতি।

বিবিসি বাংলাকে টেলিফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলছিলেন মি. ইবনে সেলিম।

“জিনিসটা না দেখালে বোঝানো যাবেনা। ইউক্রেনিয়ান, আফ্রিকান, আরব, বাংলাদেশিদের হাঁটতে দেখেছি। আমরা নিজেরা হেঁটেছি ২৭ কিলোমিটারের মতো। গুগল ম্যাপে দেখানো হচ্ছিলো ২৭ কিলোমিটার কিন্তু যে সাইনবোর্ড তা দেখে মনে হচ্ছিলো ৩০-৩৫ কিলোমিটার,” বলছিলেন তিনি।

ইউক্রেনে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর পোল্যান্ডের ওয়ারসতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেই ইউক্রেনে বাংলাদেশিদের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিলো।

জানা গেছে পোল্যান্ড সরকার ইউক্রেনে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের ১৫ দিনের জন্য ট্রানজিট ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে তারা দেশে চলে যেতে পারেন।

ইতোমধ্যে বেশ কিছু বাংলাদেশি পোল্যান্ডে এসে পৌঁছেছেন।

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা বিবিসিকে আগেই জানিয়েছিলেন যে, ইউক্রেনে হাজার দেড়েক বাংলাদেশি রয়েছে যাদের মধ্যে শ পাঁচেকের সাথে তারা যোগাযোগ রাখছেন।

বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেনকে টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ খালিদ ইবনে সেলিম বলছেন, তাদের সাথে একটি পরিবার ছিলো যেখানে বাচ্চারাও ছিলো। এ কারণে যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় বিনামূল্যে খাবার পেয়েছেন তারা।

“যখন মোটামুটি জ্যাম থেকে নেমে ১৭/১৮ কিলোমিটার হাঁটি, সেখানে যাওয়ার পর বললো এখানে স্কুলের হলে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে রেস্ট নিয়ে রাতে বা কাল সকালে বর্ডারে যেতে পারেন”।

এভাবেই তারা ধীরে ধীরে সীমান্তের দিকে এগিয়েছেন।

কিন্তু সীমান্তের চেক পোস্টে বিশৃঙ্খলার খবর গত কয়েকদিন ধরেই আসছিলো বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির কারণে।

মি. ইবনে সেলিম বলছেন, তারা এমন অনেককে পেয়েছেন যারা সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে একশ মিটারও এগুতে পারেননি সীমান্তের চেক পোস্টে।

রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর প্রথম তিন দিন শুধু নারী ও শিশুদের সীমান্ত অতিক্রমের অনুমতি দেয়া হচ্ছিলো।

শুধু পুরুষরা যেতে পারবেন না, কারণ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের থেকে যেতে হবে ইউক্রেনে।

কিন্তু এরপর আসলে সীমান্তের দিকে ঢল বেড়ে যায় বহু গুণ।

“পুরো ইউক্রেনের ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষের অর্ধেক সীমান্তে গেলে কী অবস্থা হয় তা বুঝতেই পারছেন। সব বাচ্চা বা ফ্যামিলি এমন,” বলছিলেন মি .ইবনে সেলিম।

পোল্যান্ড কীভাবে তাদের গ্রহণ করলো
শেখ খালিদ ইবনে সেলিম বলছেন, সীমান্ত অতিক্রমের পর সেখানকার সুযোগ সুবিধা তারা ভালোই পেয়েছেন।

কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে গিয়ে দুই দিন দুই রাত তাদের শুধু হাঁটতে বা দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।

“বসার সুযোগ কমই হয়েছে। লাইনের পর লাইন। হাঁটার পর হাঁটা। বর্ডারে তিন কিলোমিটার দুর থেকে সকাল ছয়টায় রওনা দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছেছি সন্ধ্যা সাতটায়। অনেকের সাথে কথা হয়েছে যারা দুই রাত শুধু লাইনেই ছিলো। এই ঠাণ্ডায় তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে,” বলছিলেন তিনি।

তবে সেখানে যাওয়ার পর সবার সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছেন তারা।

মি. ইবনে সেলিম বলেন, “এখানে একটা ফ্যাক্টরিতে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। বেড ও ফুড ফ্রি”।

সূত্র: বিবিসি বাংলা অনলাইন

কিউএনবি/অনিমা/১লা মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit