খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশীর ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শহিদ মিনার না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদ, ভাষা সৈনিক ও সাধারণ মানুষ। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মান অর্জণ করা স্বত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না থাকায় ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের অন্তরালে থেকে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেনসহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার স্থাপনের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ৬টি উপজেলায় ৬৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১৩১টি বিদ্যালয়ে স্থানীয় উদ্যোগে শহিদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। জেলা শহরের পালং তুলাসার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধানুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ জেলা শহরের বেশীরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার নেই।
পাশাপশি দুই শতাধিক কিন্ডার গার্টেন ও বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যার কোনটিতেই শহিদ মিনার নেই। তবে গোসাইরহাট উপজেলার কিছু প্রাথমিক বিদ্যলয়ে শহিদ মিনার তৈরী করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন সূত্রটি।জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পালং তুলাসার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এমদাদুল হক বলেন, প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার থাকা দরকার। তাহলে শিশু শ্রেণি থেকেই ভাষা আন্দোলন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ভাষা শহিদের সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী সৈনিক জালাল আহমেদ বলেন, মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করে আমার অনেক ভাই শহিদ হয়েছে। এমন সংবাদে নিজেকে সামলাতে পারিনি। আবেগ আপ্লুত হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন শুরু করি। ভাষার জন্য জীবন দেয়ার ইতিহাস বিশ্বে বিড়ল। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার হাতে খড়ি থেকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। প্রতিটি বিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকলে শিশু বিকাশের সাথে সাথে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে পারবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহিদ মিনার তৈরীর জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ নাই। স্থানীয় ভাবে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরীর জন্য অধিদপ্তর থেকে চিঠি দিয়েছে। আমরাও সেই চিঠি প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিয়েছি। গোসাইরহাট উপজেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়ে স্থানীয়দের উদ্যোগে শহিদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। আশা করছি সকল বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরী করা সম্ভব হবে।পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা অফিসার মো. এমারত হোসেন বলেন, জেলায় শহিদ মিনার বিহীন কোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই। প্রাথমিক পর্যায়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকলে সেখান থেকেই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস শিক্ষার্থীরা শিখে আসত। এখন ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শেখাতে হয়।
কিউএনবি/অনিমা/১৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:২২