ডেস্ক নিউজ : যাত্রী সুবিধায় জেটি নির্মাণে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ গত দশ বছরে ব্যয় করেছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। নৌযানে যাত্রীদের ওঠানামার সুবিধার্থে তিন দফা জেটি নির্মাণে এই টাকা ব্যয় করা হলেও মেলেনি সুফল। জেটির আশেপাশে পলি পড়ে চর হয়। এতে অকার্যকর অর্থহীন হয়ে পড়েছে জেটি। ভাটার সময় যাত্রীদের কাদা আর কোমর পানিতে সৃষ্ট ভোগান্তি দূর করতে ইজারাদারের এখন শেষ ভরসা কাঠ দিয়ে বিকল্প জেটি নির্মাণ। গত ৪/৫ দিন ধরে গুপ্তছড়া ঘাটে চলছে এ নির্মাণকাজ। এক সপ্তাহের মধ্যে জেটির কাজ শেষ করার মাধ্যমে যাত্রীভোগান্তি দূর করার আশা করছেন ঘাট ইজারাদার আনোয়ার হোসেন।
সন্দ্বীপের কুমিরা-গুপ্তছড়া রুটে বিআইডব্লিউটিএ ২০১২ সালে সর্বপ্রথম কুমিরা ও গুপ্তছড়া ঘাটে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি জেটি নির্মাণ করে। নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে গুপ্তছড়া ঘাটে জেটির সামনে চর জেগে ওঠায় এটি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে ২০১৫ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় করে জেটিটি সম্প্রসারণ করা হয়। কিন্তু বছরখানেকের মধ্যে সাগরেরে উত্তাল ঢেউয়ে ভেঙে যায় এ জেটির অগ্রভাগের বিশাল অংশ। আবারো অকার্যকর হয়ে পড়ে এটি। এমন অবস্থায় বিগত সমস্যাগুলো মাথায় রেখে বুয়েট বিশেষজ্ঞ দলের সহযোগিতায় বিআইডব্লিউটিএ প্রায় ৫০ কোটি খরচ করে জেটিটির ৫০০ গজ দূরে নতুনভাবে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ আরো একটি জেটি নির্মাণ করে। কিন্তু অবস্থা তথৈবচ। উদ্বোধনের তিন মাস না যেতেই জেটির অগ্রভাগে জমে পলি, জেগে ওঠে চর। বার বার ড্রেজিং করেও খুব একটা সুফল পাওয়া যায়নি। ভাটার সময় কাদা আর হাঁটু সমান পানি মাড়িয়েই এই জেটিতে উঠতে হয় যাত্রীদের। ওঠানামায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিশু-নারী-বৃদ্ধদের।
এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা জানান, সাগরের প্রবাহের রহস্যজনক আচরণে বার বার উদ্যোগ নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ গুপ্তছড়া ঘাটে সফলতার মুখ দেখেনি। যাত্রীদের ভোগান্তি দূরীকরণে আমরা জেটির পরিবর্তে দু’পাশে গাইড ওয়াল করে খাল খননের মাধ্যমে নৌযানগুলো তীরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে চাই। তাতে সাগরের উত্তাল ঢেউ, কাদা ও কোমর পানিতে নামা থেকে যাত্রীরা রক্ষা পাবে। বিআইডব্লিউটিএ খুব দ্রুত এ প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করবে।
এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীভোগান্তি দূর করতে ইজারাদার আনোয়ার হোসেন চেয়ারম্যান নিজ অর্থে কাঠ দিয়ে জেটির অগ্রভাগে প্রায় ১০০০ ফুট দীর্ঘ কাঠের জেটি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। ইজারাদার আনোয়ার বলেন, বিকল্প জেটির মাধ্যমে ভাটার সময়ে নৌযানে ওঠানামায় যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। কিন্তু শীত মৌসুমে বিকল্প এ জেটির সুফল পাওয়া গেলেও বর্ষায় সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে এ কাঠের জেটির অস্তিত্ব কতটুকু টেকসই হবে সেটা নিয়ে সংশয় করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৪:২৮