শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

ফাগুন হাওয়ায় প্রাণের মেলা হচ্ছে শুরু

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১১৩ Time View

 

ডেস্ক নিউজ :  শুরু হচ্ছে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা। ৩৮তম এই মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হলেও এবছর কোভিড এর কারণে বিলম্বিত হচ্ছে আয়োজনে। তারপরও ফাগুনের হাওয়ায় মেতেছে বই প্রেমী মানুষ।

মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন। 

এবছর অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর মূল প্রতিপাদ্য- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’। এই প্রতিপাদ্য নির্ধারণের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এবার ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর। একই সঙ্গে এবছর বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চাশ বছরও। ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও সংবিধান প্রাপ্তির এই বিশেষ সময়ে বাঙালিত্বের চেতনা জাগানিয়া বইমেলার আয়োজন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্বাধীনতার মর্মবাণী সবার মাঝে পৌছে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর গ্রন্থভুক্ত হস্তলিপি বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে স্থাপনাগুলো সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়েছে। এসব হস্তলিপি পাঠ করে তরুণরা বঙ্গবন্ধুর হাতের লেখার সঙ্গে পরিচিত হবে। একই সঙ্গে তার চিন্তা ও দর্শনের অন্তর্নিহিত অর্থও উদ্ধার করতে পারবে। এবার আনন্দের খবর, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটি একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। এই প্যাভেলিয়নটি ইতোমধ্যে অনন্যরূপে সাজানো হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে।  

এই বইমেলা ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে; চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট; মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

প্রবেশ ও বহির্গমন পথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলার এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ।

বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে চারটি প্রবেশপথ ও তিনটি কহির্গমন পথ থাকবে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির  ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মানপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

বরাবরের মতো বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভেলিয়ন, শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য একটি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার এর জন্য একটি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার শিশুচত্বর সোহরাওয়ার্দী  উদ্যান অংশে থাকবে। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে প্রথমদিকে ‘শিশু প্রহর’ থাকছে না।

অন্যদিকে, লিটল ম্যাগাজিন চত্বর উদ্যানের এম্ফি থিয়েটারের পূর্বদিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মোট ১২৭টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শতকরা ২৫ শতাংশে বই বিক্রি করবে।

বইমেলা আরো প্রাণবন্ত ও জমজমাট করতে এবং লেখকদের উৎসাহ দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুইটি তথ্যকেন্দ্র থাকবে। গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধার্থে বইমেলায় মিডিয়া সেন্টার থাকবে তথ্যকেন্দ্রের উত্তরপাশে।

বর্তমান সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এটুআই’ কর্তৃপক্ষ বইমেলায় তাদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, তথ্য কেন্দ্রের সর্বশেষ খবরাখবর এবং মেলার মূল মঞ্চে সেমিনার প্রচারের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া সার্বক্ষণিক থাকছে ওয়াই-ফাই সুবিধা।

বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মেলার তথ্যাদি প্রতিদিন সম্প্রচার করবে। এফএম রেডিওগুলোতে মেলার নানা তথ্য প্রচার করা হবে। গ্রন্থমেলার খবর নিয়ে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি বুলেটিন প্রকাশিত হবে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রতিদিন মেলার তথ্য প্রচার করবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে সারাদেশে যে জাগরণ তৈরি হয়েছে তার প্রতিফলন এই প্যাভেলিয়ন থেকে মেলায় আগত দর্শক-পাঠক ও বঙ্গবন্ধু অনুরাগীরা পাবেন। কোভিড মহামারি পরিস্থিতিতে যখনই বইমেলা হচ্ছে তখন মেলায় যাতে স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে মান্য করা হয় সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোভিড প্রটোকল মানা এবার সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এবছর মেলার বিন্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে ।

তিনি আরো জানান, গতবছর প্যাভিলিয়নগুলো উদ্যানের মধ্যমাঠে রাখা হয়েছিল। এবার তা সকল প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিন্যাসে পরিবর্তন ও সৌন্দর্যে নতুনমাত্রা যুক্ত করা হয়েছে।

খাবারের দোকানগুলোতে আগতদের টিকা কার্ড প্রদর্শন করা ছাড়া খাবার পরিবেশন বা বিক্রি করা হবে না। এছাড়া প্রতিটি স্টলে ‘নো মাস্ক, নো সেল’ এই নির্দেশনার ব্যবস্থাও রয়েছে। 

কিউএনবি/অনিমা/১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:১৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit