এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় বেড়েছে চুরি। চৌগাছা পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিনিয়তই চুরি হচ্ছে গরু-ছাগল, ধান-পাট, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন মালামাল। বিশেষ করে গরু চোরেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ সময় ট্রাক বা পিকআপে করে গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। চোরদের ঠেকাতে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।জানা যায়, ২০২১ সালের জুন মাস থেকে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৬টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসবের মধ্যে অন্তত ২৭টি গরু, ৫টি মোটরসাইকেল এবং ১৮টি ছাগল, টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শহরের কড়ইতলা বাজার থেকে ডিভাইন গার্মেন্টসের শ্রমিক ডিএম সাইদুর রহমান বিপ্লবের ১টি পালসার মোটরসাইকেল চুরি যায়। এবিষয়ে তিনি চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।তিনি বলেন, ডিভাইন গার্মেন্টসের সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে একজন যুবক প্রথমে মোটরসাইকেলটির সব লক খুলে রাখেন। কিছুক্ষণ পর গিয়ে সেটি নিয়ে তিনি চলে যাচ্ছেন।২৭ জানুয়ারি রাতে ইছাপুর গ্রামের রওনক আলীর একটি ফ্রিজিয়ান গাভি, ২২ জানুয়ারি জগন্নাথপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ৩টি গরু চুরি হয়। ১৪ জানুয়ারি দুপুরে শহরের একটি দোকানের সামনে থেকে এক ব্যক্তির টাকা চুরি যায়। ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় লস্কারপুর মাঠ থেকে শ্যালো মেশিন চুরির সময় দুই ব্যক্তিকে আটক করেন পুলিশ। পরে এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি রাতে পেটভরা গ্রামের কামাল হোসেন এবং শফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ চুরির ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই খড়িঞ্চা নওদাপাড়ায় এক বাড়িতে গরু চুরির চেষ্টা হয়। ৮ জানুয়ারি খড়িঞ্চা নওদাপাড়ার মাঠে আব্দুল মান্নানের ছাগল চুরির সময় এক নারীসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে দেয় গ্রামবাসী।
৭ জানুয়ারি রাতে শহরের বেলেমাঠ থেকে শফিয়ার রহমান এবং পার্শ্ববর্তী মারুফুল ইসলাম মেল্টুর দোকানের শাটার ভেঙে ২৮৩ মন ধান, পাট, হলুদ ও কলাই চুরি করে চোরেরা। ৬ জানুয়ারি কয়ারপাড়ার আজিম উদ্দীনের বোড়ী থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে চোরেরা। এ দিন শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তত ১০টি ছাগল চুরির খবর পাওয়া যায়। ২৯ ডিসেম্বর সলুয়ার শাহিন কবীরের দুটি গরু নিয়ে পালানোর সময় চৌগাছা থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব সরকার প্রায় ৪০ কিলোমিটার ধাওয়া করে গরু দুটি উদ্ধার করে পিকআপসহ চোরচক্রের সদস্যদের আটক করেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৭ জানুয়ারি মাত্র ৩৩ দিনের মধ্যে ১৫টি চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০টি ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ বা মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা। মোটরসাইকেল হারানোর ক্ষেত্রে মামলার বা অভিযোগের ঘটনা বেশি। এসব ঘটনায় চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চোর ধরে পুলিশে দিলে দুই-একদিনের মধ্যে চরচক্রের সদস্যরা জামিন পেলেওবাদীদের আদালতে হাজিরা দিতে হয় বছরের পর বছর। তা ছাড়া মামলা করতে গেলেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।পৌরসভার বাকপাড়ার রেহেনা খাতুন বলেন, দুটি ছোট ছেলে নিয়ে সংসারে তিনটি গরু পালন করি। চোরের ভয়ে সম্প্রতি বাড়ির সীমানা গেট তৈরি করেছি। তবুও ভয়ে ভয়ে থাকি। কখন চোরেরা আক্রমণ করে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, উপজেলায় চুরির ঘটনা বেড়েছে। তবে অধিকাংশ চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দেন না। তবে চোরচক্রের সদস্যদের আটক করতে চৌগাছা থানা-পুলিশ তৎপর রয়েছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:৩০