এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছার পুড়াপাড়া সাব-জোনাল পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তাকে নগদ নজরানা না দিলে গ্রাহকের ফাইল নড়েনা। ঘুষ গ্রহণে তিনি অভিনব কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। তিনি বলেন আমি ঘুষের টাকা হাতে নিই না পকেটে ঢুকিয়ে দিন। তার বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য, দূর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে চৌগাছা জোনাল অফিসের ডিজিএম বালী আবুল কালামের নিকট একাধিক অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী সাধারণ গ্রহকরা। ঘুষ বানিজ্য, দূর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।
ভূক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ তিনি সাব-জোনাল অফিস পুড়াপাড়ায় যোগদানের পর থেকে বিদ্যুৎ অফিসকে ঘুষ বানিজ্য ও দূর্নীতির স্বর্গরাজ্য তৈরী করেছেন। তিনি নতুন কিংবা পূন:সংযোগের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নিকট থেকে মিটার প্রতি আবাসিক ৫’শ থেকে ১ হাজার, বাণিজ্যক ২ হাজার ও শিল্প ১ হাজার ৫শ টাকা হারে নগদ নজরানা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এছাড়া সেচমোটর গ্রহক হলে নানা ভাবে হয়রানি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযমের উৎকোচ না দিলে ঐ এলাকার কোন গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছেনা। তিনি ঘুষ নেয়ার সময় বলেন টাকায় বাঘের চোখ মেলে আমি কেন মিটার দেবনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছিয়ে দেওয়ার কর্মসুচি দারুণ ভাবে বাঁধা গ্রস্থ করছেন তিনি। তাকে তুষ্ট করলে তিনি আইন তৈরী করে সার্ভিস ড্রপ গ্রাহকে ননষ্টেক মহাপরিকল্পনার আওতায় ষ্টেকিংসীটে নাম তালিকা ভূক্ত করে মিটার লাগিয়ে দেন।
একাধিক ব্যাক্তি জানান তিনি যোগদানের পর থেকে টাকা বাদে কোন গ্রাহক তার কাছ থেকে সংযোগ পায়নি। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, পুড়াপাড়া, ভাটপাড়া, মাধবপুর, চুটারহুদা মান্দারবাড়ীয়া, শ্যামনগরসহ বিভিন্ন গ্রামের একাধিক ভূক্তভোগী এ প্রতিবেদককে জানান যারা সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযমকে নগদে তুষ্ট করেছে বিদ্যুৎ পেতে তাদের কোন নিয়ম লাগে না। এদিকে কৃষিসেচ কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ চালিত মোটর, মিলচাতালে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ চালিত মোটর পেতে সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযমকে নগদ নারায়নে তুষ্ট না করলে তা পাওয়া যায়না। একজন গ্রহক জানান একটি কৃষি সেচ মোটরের জন্য তিনি আমার নিকট ১০ হাজার টাকা দাবী করে। ঘুষের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমাকে নানা অজুহাতে দীর্ঘ দিন ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গ্রহক জানান গোলাম আযম আমার নতুন মিটার সংযোগ করতে ৫শ টাকা ঘুষ দাবী করেন। তিনি বলেন মিটার নিতে সবাই আমাকে ৫শ’ টাকা দিয়ে থাকেন আপনি দেবেন না কেন।
এমনি ভাবে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, পুড়াপাড়া, ভাটপাড়া, মাধবপুর, চুটারহুদা মান্দারবাড়ীয়া, শ্যামনগরসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার অর্থ বাণিজ্য ,অপকর্ম, গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচারণ, ঘুষ গ্রহণ ও দূর্নীতির অভিযোগে তিনি মেহেরপুর থাকা কালিন সময়ে কয়েকবার বেতন হেল্ডআপসহ একবার সাময়িকভাবে সাসপেন্ট করা হয়। ভোক্তভোগী এলাকাবাসীর দাবী ঘুষখোর, দূনীতিবাজ সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ। এ ব্যাপারে সহকারী-জুনিয়ার ইনঞ্জিয়ার গোলাম আযম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। আমাকে কেউ ফাঁসাতে এ সব মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। আমি গ্রাহকের নিকট থেকে এক পয়সাও নিই না। চৌগাছা জোনাল অফিসের ডিজিএম বালী আবুল কালাম বলেন, তার বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি সুনিদৃষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব।
কিউএনবি/আয়শা/৬ই জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:১৮