ডেস্ক নিউজ : খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার নুরপুর গ্রামে কৃষি জমি কেটে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। রামগড় পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে পড়েছে ফসলি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ফলদ ও বনজ বাগান মালিক এবং স্থানীয়দের ঘরবাড়ি। এছাড়া বড় বড় ট্রাক দিয়ে বালু পরিবহন করায় গ্রামীণ সড়কটির অনেক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রামগড় বরাবর পুরনো পুকুর খনন করার অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন দিয়েই কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন নুরপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সুমন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্থানে পুকুরের কোনো অস্তিত্ব নেই। এটি একটি কৃষি জমি। জমির ওপরের অংশে সামান্য মাটি থাকলেও নিচে সব বালুর স্তুপ। বালু উত্তোলনে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকায় বালুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জমির মালিক অতিমুনাফার লোভে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করে ট্রাকযোগে বিক্রি করছেন।
রামগড় ৪৩ বিজিবি’র সদর দপ্তরের পাশে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আধা কিলোমিটার ভেতরে পাহাড়ের ঢালে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চললেও প্রশাসন থাকছে নীরব। বালুমহল মাঠি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ধারাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করায় পাহাড়ের পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বর্ষাকালে ওই স্থানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন এলাকার বাসিন্দারা।
নামপ্রকাশে অনৈচ্ছুক তৈচালা ও নুরপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেট বিভিন্ন বাধাকে উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। কয়েকমাস ধরে দিনরাত ট্রাকে মাটি ও বালু পরিবহন করায় গ্রামীণ সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আবার বালু তোলার কারণে ফসলি জমি, পাহাড় ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। তারা আরও বলেন, প্রভাবশালী বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার মেলেনি।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী মো. সুমন জানান, আমার নিজের মালিকানা জায়গা থেকে উপজেলা ভূমি অফিসকে জানিয়েই বালু উত্তোলন ও পুকুর খননের কাজ করছি। তবে পুকুর খননের আবেদন করে পুকুর খনন না করে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন করে বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে মো. সুমন তা এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, দু’মাস আগে উপজেলা প্রশাসন রামগড়ের পিলাক ঘাটে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় জনৈক ব্যবসায়ীকে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা আদায়ের পরও থামছে না এমন কর্মকাণ্ড। বরং এই সিন্ডিকেট দিনে কাজ না করে সারারাত বালু উত্তোলন করে বাইরে পাচার করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে হাবিবা মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/৫ই জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:২৭